বরিশালে ইলিশে ভরপূর, দাম কমেনি খুচরা বাজারে

0
566
সোমবার পোর্ট রোডের মোকামে আসা ইলিশের স্তুপ।

ঈদুল আজহার পরপরই সরগরম হয়ে উঠেছে বরিশালের ইলিশ মোকাম। গত ৩-৪ দিন ধরে পোর্ট রোডের পাইকারি ইলিশ মোকামে প্রতিদিন ৫০০ থেকে হাজার মণ ইলিশ আসছে। তবে বেশিরভাগ ইলিশই গভীর সাগরের। জেলে ও ইলিশ ব্যবসায়ীদের মতে, ‘ঘর গাঙ্গে’ (ভেতরের নদী) পর্যাপ্ত ইলিশ পড়তে শুরু করেনি এখনও। এদিকে মোকামে ইলিশের আমদানি বাড়ায় পাইকারি বাজারে কিছুটা কমলেও দাম কমেনি খুচরা বাজারে।

সোমবার পোর্ট রোড ইলিশ মোকামসহ নগরীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকায়।

ইলিশের আমদানি বাড়লেও দাম কেন কমছে না- তা জানতে চাইলে পোর্ট রোড পাইকারি ইলিশ মোকামের আড়তদার জহির সিকদার জানান, সাগর থেকে যে ইলিশ আসছে তার দুই-তৃতীয়াংশ চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তাছাড়া যথাযথভাবে ইলিশের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাও নেই। ফলে খুচরা বাজারে ইলিশের দাম কমছে না। তার মতে, উপকূলীয় নদীগুলোতে যখন ব্যাপকভাবে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করবে, খুচরা বাজারে দাম কমবে তখন।

সোমবার সকাল ১১টায় বরিশাল পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশের প্রচুর আমদানি। সাগর থেকে আসা ট্রলার থেকে ঝুড়িবোঝাই করে শ্রমিকরা মাছ তুলছেন মোকামে। পাইকারি বিক্রেতারা প্যাকেজিং করে ভরছেন ট্রাকে।

পরেশ দাস নামের এক খুচরা ইলিশ বিক্রেতা বলেন, ‘যে মাছ আসছে তা সাগরের। এ মাছে ডিম বেশি এবং বরফ দেওয়া। ফলে স্থানীয় বাজারে এ মাছের চাহিদা কম। তাই বেশিরভাগ চালান হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এ কারণে স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কমছে না।’

অপর এক খুচরা বিক্রেতা রুস্তম আলী বলেন, ‘ঘর গাঙ্গে’ মাছ ধরা পড়তে শুরু করলে স্থানীয় খুচরা বাজারে দাম কমবে। সাগরের মাছ বরিশালের বাইরে চালান হয় বেশি। তাই দাম কমে না।’

বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি অজিৎ দাস মনু জানান, ঈদের পর থেকে ইলিশের আমদানি বেড়েছে দ্বিগুণ। সোমবার প্রায় ৬০০ মণ ইলিশ আমদানি হয়েছে বরিশালের মোকামে। রোববার এসেছিল সাড়ে ৪০০ মণ। তবে শনিবার ইলিশের আমদানি হয় রেকর্ড পরিমাণ ১ হাজার মণের বেশি। তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে সোমবার ৬শ’ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা। গত রোববার যা ছিল ৩৩ হাজার টাকা। আর শনিবার বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ৩০ হাজার টাকা, যা ঈদের আগের তুলনায় অনেক কম। কেজি সাইজের ইলিশ সোমবার বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ৪২ হাজার টাকা। রোববার ও শনিবার একই সাইজের ইলিশ অবশ্য ২ হাজার টাকা কমে ৪০ হাজার করে মণ বিক্রি হয়েছে।’

স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম কেন কমছে না- জানতে চাইলে অজিৎ দাস বলেন, ‘বরিশালের বাইরে চালান বেশি হওয়ার কারণে দাম কমছে না। তবে স্থানীয় বাজারে সাগরের মাছের চাহিদাও কম।’

বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘মোকামে গত কয়েকদিন ধরে ইলিশের আমদানি বেড়েছে।’ তবে দাম না কমার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মৎস্য বিভাগ বাজার মনিটর করে না। দামের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের যথাযথ নজরদারি প্রয়োজন। তাহলে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো দরদাম ঠিক করতে পারবেন না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.