কারফিউ ভেঙে বগুড়া শহরের রাস্তায় নেমে এসেছেন লাখো মানুষ। আজ সোমবার শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে বেলা দুইটার পর শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথাকে ঘিরে সব কটি রাস্তায় মিছিল নিয়ে লাখো ছাত্র-জনতার ঢল নামে।
মুহূর্তে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সাতমাথা-শেরপুর সড়ক, সাতমাথা থেকে সার্কিট হাউস মোড় হয়ে নওয়াববাড়ি সড়ক ও সার্কিট হাউস থেকে জলেশ্বরীতলা রোমেনা আফাজ সড়ক। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, নারী থেকে কিশোরী সব বয়সীকে উল্লাস করতে দেখা যায়। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যদের বেশ কিছু গাড়ি দেখে মিছিলকারীরা সেনাসদস্যদের স্যালুট দিয়ে ও হাত নাড়িয়ে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে বেলা দুইটার দিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হলে খবর আসে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। সেনাবাহিনী সেই সময় পর্যন্ত জনসাধারণকে সহিংসতা পরিহার করে ধৈর্যধারণের অনুরোধ করে।
এরপরই গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেছেন। শহরের রাস্তায় নেমে আসেন লাখো ছাত্র-জনতা। খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জনতা শহরের রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁরা বিজয়মিছিলে উল্লাস করেন।
মিছিলে আসা বগুড়া জিলা স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদমান শাহরিয়ার সাজিদ বলেন, ‘১৯৭১–এ দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাঙালির বিজয়ের সেই দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হয়নি, কিন্তু ২০২৪ সালের আমার শত শত ভাইদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়ের অন্য রকম অনুভূতি। ঠিক যেন একাত্তরের সেই বিজয়ের স্বাদ অনুভব করছি আজ।’
এদিকে শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকি সড়ক অতিক্রম করার সময় একটি খণ্ড মিছিল থেকে রেজ্জাক-উল-হায়দার বাণিজ্যিক টাওয়ারের নিচতলায় বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুভাশীষ পোদ্দারের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া ভবনের দোতলায় হোটেল লাভিস্তাতেও ইটপাটকেল ছুড়ে গ্লাস ভাঙচুর করা হয়।
বিকেল সাড়ে চারটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শহরের রাস্তায় লাখো মানুষের উল্লাস চলছিল।