ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় বর্তমানে অনেকেই ভুগছেন। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা আবার দু’ভাগে বিভক্ত– অ্যালকোহলিক ও নন-অ্যালকোহলিক। অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার মূল কারণ হলো মদ্যপান। তবে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার অ্যালকোহল সেবনের সঙ্গে যুক্ত নয়। যে কারও এ সমস্যা হতে পারে। জীবনযাত্রার অনিয়মের ফলেই এ রোগ বেশি দেখা দেয়।
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ কী?
এটি এমন এক অবস্থা, যেখানে লিভারে অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি জমা হয়। এই চর্বি জমা অবশ্য অ্যালকোহল ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত বা সম্পর্কিত নয়।
এনএএফএলডিও দুই ধরনের হতে পারে– সাধারণ ফ্যাটি লিভার (এনএএফএল) ও নন-অ্যালকোহলিক স্টেটোহেপাটাইটিস (এনএএসএইচ)।
সাধারণ ফ্যাটি লিভার বলতে সেই অবস্থাকে বোঝায়, যেখানে লিভারে চর্বি জমা হয়। তবে প্রদাহ ও লিভারের ক্ষতির কোনো লক্ষণ থাকে না। অন্যদিকে নন-অ্যালকোহলিক স্টেটোহেপাটাইটিস (এনএএসএইচ) হলো এনএএফএলডির একটি গুরুতর রূপ। কারণ এটি শুধু চর্বিই জমা করে না, এর সঙ্গে লিভারের কোষগুলোর প্রদাহও বেড়ে যায়; যা ফাইব্রোসিস বা লিভারে দাগের সৃষ্টি করে। পরবর্তী সময়ে এটি আরও জটিলতা সৃষ্টি করে, যা লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সারের দিকে পরিচালিত করে।
সকালের যে লক্ষণ দেখলে সাবধান থাকবেন
ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় শরীরে নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ক্লান্তি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই যদি প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে সতর্ক থাকতে হবে। ক্লান্তি বোধ করার বিষয়টি কখনও হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়, বিশেষ করে যখন এটি ঘন ঘন হয়।
ক্লান্তি ছাড়াও যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে–
পেটের ওপরের ডানদিকে অস্বস্তি বা ব্যথা
পেট ফুলে যাওয়া জন্ডিস ত্বকের পৃষ্ঠের ঠিক নিচে বর্ধিত রক্তনালি অব্যক্ত বা অনিচ্ছাকৃত ওজন কমা ইত্যাদি।
প্রতিরোধে করণীয়
অ্যালকোহল গ্রহণ করা বন্ধ করতে হবে। ঘন দুধের তৈরি খাবার বা ফুলক্রিম মিল্ক খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।
বিভিন্ন রঙের শাকসবজি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে, যেমন– বিটরুট, গাজর, মিষ্টিকুমড়া, শিম, বরবটি, ব্রকলি ইত্যাদি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি সেদ্ধ ডিম রাখতে পারেন। ডেইরি প্রোডাক্টের মধ্যে খেতে পারেন টক দই, নন-ফ্যাট মিল্ক। দেশি মৌসুমি বিভিন্ন ফল খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারেন। খাবার তৈরিতে তেলের ব্যবহার কমাতে হবে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মসলাজাতীয় খাবার কম খেতে হবে।
লেখক: সহকারী রেজিস্ট্রার (মেডিসিন), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর