ফের বিমান দুর্ঘটনা, ত্রিভুবন বিমানবন্দর কেন এত ঝুঁকিপূর্ণ?

0
64
উড্ডয়ন ও অবতরণের জন্য নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ। ছবি: সংগৃহীত
নেপালের কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (টিআইএ) বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার (২৪ জুলাই) এ দুর্ঘটনা ঘটে। এটিই ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া সবশেষ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা। এই বিমানবন্দরটিতে প্রায়ই ঘটে এমন দুর্ঘটনা। এ কারণেই কাঠমান্ডু বাগমাতির এই বিমানবন্দরকে উড্ডয়ন ও অবতরণের জন্য অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। তার কয়েকটি কারণও রয়েছে।

টিআইএর একটি ‘ট্যাবলেটপ’ রানওয়ে রয়েছে। এটি ছাড়াও অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে যেমন অতি উচ্চতা, আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং হিমালয় ভূখণ্ডের উপস্থিতি। এসব কারণে ত্রিভুবন বিমানবন্দরটিতে এত বেশি দুর্ঘটনা ঘটে বলে মনে করা হয়।

ট্যাবলেটপ রানওয়ে
ট্যাবলেটপ রানওয়ে মালভূমি, পাহাড় বা অন্যান্য উঁচু পৃষ্ঠের ওপর বানানো হয়। এটির এক বা উভয় প্রান্ত উঁচুতে থাকে এবং সাধারণত তা খাদের দিকে। অবতরণ বা উড্ডয়নের সময়, পাইলটদের নীচের সমতল ভূমির মতো একই স্তরে থাকার অপটিক্যাল বিভ্রম নেভিগেট করতে হয়। একটি ট্যাবলেটপ রানওয়ে থেকে অবতরণ এবং টেক-অফ করার জন্য অত্যন্ত দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়।
 
ট্যাবলেটপ রানওয়েতে এ কারণেই বেশিরভাগ সময় মেকানাইজড বা ‘ইনস্ট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং’ করা হয় না। নেপালে, ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অন্তত সাতটি বিমানবন্দরে তার পাহাড়ি ভূখণ্ডের কারণে ট্যাবলেটপ রানওয়ে রয়েছে। ভারতে, হিমাচল প্রদেশের সিমলা বিমানবন্দর, কেরালার কালিকট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরেও   ট্যাবলেটপ রানওয়ে রয়েছে।

আবহাওয়া
ত্রিভুবন বিমানবন্দর কাঠমান্ডু উপত্যকায় হওয়ার কারণে ভালো আবহাওয়া থাকলে সেখান থেকে অল্প দূরত্বে হিমালয় পর্বত দেখতে পাওয়া যায়। বিমানবন্দরটি প্রায় ১৩৩৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। হিমালয়ের উপস্থিতি থাকায় তা আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে। ঝড়ো বাতাস বা ঘন কুয়াশা যাই হোক না কেন, হিমালয়ের প্রভাব পড়ে তার ওপর।

প্রয়োজন অভিজ্ঞ পাইলট 
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের মতো কঠিন বিমানবন্দরে বিমান চালানার জন্য কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার দরকার হয় পাইলটদের। শুধু যাদের এই দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আছে তারাই এখানে বিমান উড্ডয়ন বা অবতরণ করাতে পারবেন। 

ছোট এবং ব্যস্ত বিমানবন্দর
এই ধরনের একটি ছোট বিমানবন্দর হিসেবে টিআইএ ২০২৩ সালে কমপক্ষে ৮.৫ মিলিয়ন ট্রাফিক পরিচালনা করেছে। অবশ্য বিমানবন্দরে যানজট মোকাবেলা করার জন্য,নেপাল সরকার গত কয়েক বছরে পোখরা ও  লুম্বিনীসহ অন্য বিমানবন্দরগুলোকে উন্নত করেছে।
বিশেষ করে এভারেস্ট পর্বতারোহণের সময় পর্যটন মৌসুমে, বিমানবন্দরটি অবতরণ এবং টেক-অফের জন্য ব্যস্ত থাকে। এই ধরনের ব্যস্ত সময়ের জন্য বিমানবন্দরটি যথেষ্ট বড় নয়। এর রানওয়ে প্রায় ৩৩৫০ মিটার যা অন্যান্য বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে ৩৫০০ মিটার হয়ে থাকে। তার মানে পাইলটদের নিরাপদে ল্যান্ড করার জন্য ও টেক-অফ করার জন্য তারা হাতে কম সময় পান ও দূরত্বও থাকে কম।  
 
সূত্র: ওয়াইওন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.