বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার ঘোষিত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের কারণে আগামী ২ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্থগিত হওয়া এই পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি ২০২৬ (শুক্রবার) আয়োজনের একটি সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এটিই চূড়ান্ত নয়; জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সঙ্গে আলোচনা ও তাদের মতামত নেওয়ার পর দ্রুতই চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হবে।
স্থগিতের কারণ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার আগামী বুধবার থেকে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর এবং ১ ও ২ জানুয়ারি) পর্যন্ত তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। ২ জানুয়ারি শোকের শেষ দিন হওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ কমিটি। মহাপরিচালক জানান, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রেখে ৯ জানুয়ারি ২০২৬ (শুক্রবার) পরীক্ষা আয়োজনের একটি সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
পরীক্ষায় অংশ নিবে ১০ লাখ প্রার্থী
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নিয়োগে পদের তুলনায় প্রার্থীর সংখ্যা আকাশচুম্বী। দুই ধাপ মিলিয়ে মোট ১৪ হাজার ৩৮৫টি শূন্য পদের বিপরীতে আবেদন করেছেন ১০ লাখ ৮০ হাজার ৮০ জন। সেই হিসাবে গড়ে প্রতিটি পদের বিপরীতে লড়াই করবেন প্রায় ৭৫ জন চাকরিপ্রত্যাশী। এর মধ্যে প্রথম ধাপে প্রতি পদের বিপরীতে ৭৩ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) ৮০ জনের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পরীক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা
পরীক্ষা পেছালেও অধিদপ্তরের জারি করা অন্যান্য নির্দেশনাবলি ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে:
প্রবেশপত্র ও এনআইডি: ২৭ ডিসেম্বর থেকে ডাউনলোড শুরু হওয়া প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট এবং মূল এনআইডি কার্ড (স্মার্ট কার্ড) অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে।
কেন্দ্রে প্রবেশের সময়: পরীক্ষার্থীদের সকাল ৯টার মধ্যে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। ৯টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর আর কোনো প্রার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
কান উন্মুক্ত রাখা: ব্লুটুথ বা অদৃশ্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস শনাক্ত করতে এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ শর্ত দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থীদের উভয় কান উন্মুক্ত রাখতে হবে। প্রয়োজনে টর্চলাইট দিয়ে কান পরীক্ষা করা হবে।
পরীক্ষা কেন্দ্রে যা যা নিষিদ্ধ : কেন্দ্রে মোবাইল ফোন, ক্যালকুলেটর, স্মার্ট ওয়াচ, যেকোনো ধরনের ঘড়ি, পার্স বা কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এসব সামগ্রী পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওএমআর পূরণ: উত্তরপত্র (ওএমআর) পূরণে অবশ্যই কালো কালির বলপয়েন্ট কলম ব্যবহার করতে হবে। পেনসিল ব্যবহার করলে উত্তরপত্র সরাসরি বাতিল হবে।
সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে প্রতিটি কেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। নিয়োগের নামে কোনো অসাধু চক্রের সঙ্গে লেনদেন না করার জন্য প্রার্থীদের সতর্ক করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরীক্ষার চূড়ান্ত তারিখ ও সময় খুদে বার্তার (এসএমএস) মাধ্যমেও প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হবে।


















