রোহিঙ্গাবিদ্বেষ ছড়ানো বৌদ্ধ ভিক্ষুকে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার দিল মিয়ানমারের সেনা সরকার

0
102
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য আলোচিত–সমালোচিত বৌদ্ধ ভিক্ষু আশিন উইরাথু, ছবি: এএফপি

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ঘৃণা ছড়িয়ে আসছেন ভিক্ষু উইরাথু। এর আগে তিনি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের মালিকানায় থাকা ব্যবসা বর্জন করা এবং মুসলিমদের সঙ্গে বৌদ্ধদের বিয়ে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে আলোচনায় এসেছিলেন। ২০১৩ সালে বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে তাঁর ছবি ছাপা হয়েছিল। ওই প্রচ্ছদে তাঁকে ‘বৌদ্ধ সন্ত্রাসের মুখ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ভিক্ষু উইরাথুকে অনেকেই ‘বৌদ্ধদের বিন লাদেন’ নামেও ডাকেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো উইরাথুকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর বিদ্বেষ বাড়াতে জান্তাকে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। তাদের অভিযোগ, উইরাথুর মুসলিমবিদ্বেষী এমন ভূমিকা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর জান্তার দমনপীড়ন চালাতে সহায়তা করেছে। এর জেরেই ২০১৭ সালে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ছবি ছাপা হয়েছিল বৌদ্ধ ভিক্ষু উইরাথুর

বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ছবি ছাপা হয়েছিল বৌদ্ধ ভিক্ষু উইরাথুর
ছবি: এএফপি

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মিয়ানমারের জান্তা সরকার ৭ হাজার ১২ জন কারাবন্দীকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে এসব বন্দীর মধ্যে রাজনৈতিক নেতা–কর্মীরা আছেন কি না, তা জানা যায়নি। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে ভাষণ দিয়েছেন মিন অং হ্লাইং। এ সময় তিনি তাঁর দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য কিছু দেশের সমালোচনা করেন। বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দেন চীন, ভারত, থাইল্যান্ড, লাওস ও বাংলাদেশকে।

এ বিষয়ে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘আমি কিছু দেশ এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংগঠনকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। নানা সমালোচনা, চাপ, হামলার মধ্যেও এসব দেশ ও সংগঠন আমাদের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে সম্পর্ক এগিয়ে নিচ্ছে।’

এদিকে রাজধানী নেপিডোয় স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে ভাষণ দিতে গিয়ে আজ বুধবার জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং মিয়ানমারে বহু দলের অংশগ্রহণে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। তবে কবে নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। জান্তাপ্রধান বলেন, ‘একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে।’

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এর কারণে দেশটিতে দেখা দেয় রাজনৈতিক সংকট ও জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। এর পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভ দমনের নামে চলছে জান্তার দমনপীড়ন। প্রাণ গেছে হাজারের বেশি মানুষের। জান্তার হাতে বন্দী আছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু চিসহ অনেক রাজনীতিক।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.