নেটফ্লিক্সের নতুন থ্রিলার ‘জুয়েল থিফ: দ্য হেইস্ট বিগিনস’ ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন অভিনেত্রী নিকিতা দত্ত। সাইফ আলী খান ও জয়দীপ অহলাওয়াতের সঙ্গে তাঁর অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছে। সাহসী সংলাপ, সংবেদনশীল অভিনয় এবং পর্দায় রসায়নের জন্য দর্শকের মন জয় করেছেন নিকিতা। তবে অভিনয় নয়, তিনি হতে চেয়েছিলেন ভারত সরকারের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। সম্প্রতি ওয়েভস সামিট ২০২৫-এ অংশ নিয়ে নিকিতা জানান তাঁর জীবনের সেই অপ্রকাশিত অধ্যায়ের কথা।
নিকিতা বলেন, ‘আমি একজন সেনা পরিবারের মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই কঠোর অনুশাসনের মধ্যে বড় হয়েছি। আমার আশপাশের প্রায় সবাই সেনাবাহিনী কিংবা প্রশাসনিক দপ্তরে যুক্ত ছিলেন। এমন একটা পরিবেশে বেড়ে ওঠায় আমিও ভেবেছিলাম, জীবনে শৃঙ্খলা ও কর্তব্যকেই প্রাধান্য দেব। ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম। কিন্তু একসময় বুঝলাম, সৃজনশীলতা আমার ভেতরে সাড়া দিচ্ছে। অভিনয়ের প্রতি টান তৈরি হচ্ছিল। তবে সিদ্ধান্তটা সহজ ছিল না। প্রশাসনিক ক্যারিয়ার ছেড়ে এই অনিশ্চিত ইন্ডাস্ট্রিতে আসাটা আমার জন্য অনেক বড় পরিবর্তন ছিল।’

২০১৪ সালে ‘লেকার হাম দিওয়ানা দিল’ ছবির মাধ্যমে শুরু হয় নিকিতার অভিনয়জীবন। এরপর টেলিভিশনে ‘ড্রিম গার্ল–এক লড়কি দিওয়ানি সি’ ধারাবাহিক দিয়ে দর্শকদের কাছে পরিচিতি পান। পরে ওটিটিতে ‘দ্য বিগ বুল’, ‘ডিবুক’–এর মতো ছবিতে অভিনয় করেন।
অভিনয়শিল্পে নিজের জায়গা তৈরি করতে নিকিতাকে পেরোতে হয়েছে অনেক পথ। অকপটে বলেন, ‘আমার নামের পাশে “টেলিভিশন অভিনেত্রী” তকমাটা ছিল একটা প্রতিবন্ধকতা। জানতাম, ইন্ডাস্ট্রিতে পছন্দ-অপছন্দ, সুযোগ বণ্টনে অসমতা—সবই আছে। কিছু নাম, কিছু পদবি সব সময় অগ্রাধিকার পায়।

আমিও সেই ট্যাগের শিকার হয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘নেপোটিজম আর ফেভারিটিজম নিয়ে আলোচনা বহু পুরোনো। এগুলো থাকবেই। আমার ভাবনা ছিল, এসব নিয়ে কান্নাকাটি না করে বরং নিজের মতো করে পথ তৈরি করব। এই মানসিকতা আমাকে টিকিয়ে রেখেছে।’
অভিনয়ে প্রতিষ্ঠা পেলেও নিজের শিকড় ভুলে যাননি নিকিতা। তাঁর ভাষায়, ‘সেনা পরিবার থেকে আসায় জীবনের প্রতি যে দায়িত্ববোধ আর নিয়ম শিখেছি, সেগুলোই আজ আমাকে টিকে থাকতে সাহায্য করছে। প্রতিটি চরিত্রে অভিনয়ের আগে আজও আমি প্রস্তুতি নিই, ঠিক যেন কোনো চাকরির পরীক্ষায় বসছি।’
অভিনয়ের জগতে তাঁর আসা যেন এক অনিচ্ছাকৃত যাত্রা; কিন্তু সেই যাত্রাকে তিনি বদলে দিয়েছেন আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম ও আত্মনিবেদনের মাধ্যমে।