আইনজীবীদের অন্যতম সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (২০২৩-২৪) এবারের নির্বাচন পরিচালনাকে ঘিরে পুলিশের হামলাসহ গেল দিন ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ননা আপিল বিভাগে তুলে ধরেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন তারা।
প্রধান বিচারপতি বিএনপিপন্থী আইনজীবদের বলেন, ‘আপনারা ১১টার সময় খাস কামরায় আসেন। প্রয়োজন হলে অ্যাটর্নি জেনারেলকে ডেকে নেব।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নজীরবিহীন ঘটনা গতকাল ঘটেছে, যা চলমান। আজও রুমে তালা লাগানো আছে, অনেকের রুমের চারপাশে পুলিশ দেওয়া হয়েছে। বাইরে থেকে এ ঘটনার পেছনে কেউ আছে কিনা তা দেখতে হবে। এই অঙ্গনে এটা কি অনুমোদিত? তারা সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নির্যাতন করেছে। আমরা সুরক্ষা চাচ্ছি, ভুক্তভোগীরা বলবেন।’
সমিতির নির্বাচনে বিএনপি প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘আপনারা দেশের বিচার বিভাগের অভিভাবক। তাই প্রত্যেকের ব্যাথা, কষ্ট অভিভাবক হিসেবে অবহিত করা উচিত। সমিতির নির্বাচন হয় সব সময় উৎসবমুখর। তবে এবার কি হলো? আজও আমি রুমে ঢুকতে পারিনি। রুমের বাইরে থেকে তালা লাগানো। কক্ষের সামনে পুলিশ রয়েছে। হাজার হাজার পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। অনেক আইনজীবীরা আহত হয়েছে। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। গতকালের ঘটনা দেখেছেন, পুলিশ কীভাবে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বের করে দিয়েছে। আমরা কী অপরাধ করেছি? আমি প্রার্থী আমি কেন ভোট কেন্দ্রে থাকতে পারব না?’
পরে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘মি. রুহুল কুদ্দুস আপনাদের সবাইকে সম্মান করি। আপনারা দু’জন ১১টার সময় (বিরতি) আসেন। কোনো করণীয় থাকলে করবো। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেব।’
সমিতির সভাপতি পদপ্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘নজিরবিহীন ঘটনা। ভোটকেন্দ্রে তিন চারশ পুলিশ ঢুকে ধাক্কা দিতে থাকে। সবাই পড়ে যাচ্ছিল আর পুলিশ পা দিয়ে পাড়িয়েছে। আমার পায়ে ব্যাথা আমি ঠিকমতো দাঁড়াতে পারছি না। অনেক আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের আহত করা হয়েছে।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘এ কথাগুলো ভেতরে বসে শুনি। ১১ টায় আসেন, আমরা আপনাদের কথা শুনবো। এখন কোর্টের কাজ করি।’
এক পর্যায়ে রুমের তালা খুলে দেওয়ার ও পুলিশ সরানোর আরজি জানান রুহুল কুদ্দুস। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কোর্টে বসে এটি বললে, আদেশ হয়ে যাবে। ১১ টায় আসেন, শুনি।’