প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশকে ওএসএতে যুক্ত করেছে জাপান

0
144
‘বাংলাদেশ-জাপান কৌশলগত সম্পর্ক বাস্তবায়ন: কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও জনগণ সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম (বাঁয়ে) ও ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)। ঢাকা, ২৬ আগস্ট, ছবি: জাপান দূতাবাসের সৌজন্যে

ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেছেন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করতে বাংলাদেশকে সরকারি নিরাপত্তা সহায়তা (ওএসএ) প্রকল্পে যুক্ত করেছে জাপান। নতুন এই কর্মসূচিতে প্রথম বছর যে চার দেশকে জাপান যুক্ত করেছে, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম।

আজ শনিবার দুপুরে জাপান দূতাবাসের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনার সমাপনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি এ কথা বলেন। গবেষণাপ্রতিষ্ঠান প্যান এশিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পারি) ‘বাংলাদেশ-জাপান কৌশলগত সম্পর্ক বাস্তবায়ন: কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও জনগণ সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক’ শীর্ষক ওই আলোচনার আয়োজন করে।

গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফর করেন। এ সফরের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর দুই দেশের সম্পর্ক কৌশলগত পর্যায়ে উন্নীত হয়। শীর্ষ বৈঠকের পর প্রচারিত যৌথ ঘোষণায় বাংলাদেশকে ওএসএতে যুক্ত করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, সশস্ত্র বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে বাংলাদেশকে ওসিএতে যুক্ত করা হয়েছে। ওই রূপরেখার আওতায় সহযোগিতা বাড়াতে বিশেষ করে সমরাস্ত্র বিনিময় ও প্রযুক্তি বিনিময়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সইয়ের জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে যৌথ সমীক্ষা দল গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে দুই দফা আলোচনা শেষ হয়েছে। সমীক্ষা দল তৃতীয় দফা আলোচনা শেষ করে খুব দ্রুত ইপিএ শুরু করতে চায়।

জাপানের রাষ্ট্রদূত জানান, এ বছরের শেষ নাগাদ জাপানের স্বেচ্ছাসেবীদের আবার বাংলাদেশে পাঠানো শুরু হবে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, কুষ্টিয়ায় জন্ম নেওয়া বাঙালি বিচারপতি রাধা বিনোদ পাল বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত্তি গড়েছিলেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপ্রক্রিয়ায় যে ভূমিকা রেখেছিলেন, সেটা এখনো জাপানিদের মনে আছে। এ ছাড়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জাপানি শিক্ষার্থীরা টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য সহায়তা পাঠিয়েছিলেন, এটাও স্মরণযোগ্য।

শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০১৪ সালে জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঢাকা সফর ও ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বেড়েছে। এই প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ৪০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সংযুক্তি বাড়ানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই সংযুক্তি বাড়াতে সহায়তা দিচ্ছে জাপান। বাংলাদেশ-জাপান আগামী দিনে এক সঙ্গে এগিয়ে যাবে।

পারির সভাপতি ইয়োজি আন্দোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই অধিবেশনে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.