সোলেদার দখল করতে পারলে সেটা হবে রাশিয়ার জন্য অনেক সুবিধাজনক। কারণ, রুশ বাহিনীর মনোযোগ এখন সোলেদার থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের শহর বাখমুত দখলে নেওয়া। সম্প্রতি সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই হয়েছে। এতে রাশিয়া অনেক সেনা ও সরঞ্জাম হারিয়েছে বলে দাবি ইউক্রেনের। একই সঙ্গে এ-ও বলা হচ্ছে, রাশিয়া সম্প্রতি বেশ কিছু লড়াইয়ে হেরে গেছে। সোলেদার দখলে নিতে পারলেই সেটাকে রাশিয়ার আপাত বিজয় ধরে নেওয়া হবে।
বাখমুত শহরের অবস্থান স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের সীমানায়। অঞ্চল দুটিকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে যুক্ত করেছে রাশিয়া। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিয়ে দনবাস অঞ্চল। বাখমুত দখল রাশিয়ার জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এতে করে এতে ক্রামাতরস্ক ও স্লোভিয়ানস্কের মতো বড় শহরের দখল নেওয়া রাশিয়ার জন্য সহজ হবে।
সোলেদারে ইউক্রেনীয় সেনাদের সঙ্গে থেকে যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করছেন সাংবাদিক ইউরিই বুস্তোভ। তিনি নিউজ ভয়েস নামের একটি সংবাদমাধ্যমের হয়ে কাজ করেন। বুস্তোভ বলছেন, সোলেদার শহর থেকে ইউক্রেনের মূল যে সরবরাহ রুট, সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রুশ বাহিনী। শিগগির শহরের পুরো নিয়ন্ত্রণ নেবে তারা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গতকাল সোমবার রাতে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, বাখমুত ও সোলেদারে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। তবে ইউক্রেনের সেনারা প্রতিরোধ চালাচ্ছেন। নতুন করে রুশ বাহিনীর অবিরত হামলায় কোনো দেয়াল আর দাঁড়িয়ে নেই। সবখানে পড়ে আছে রুশ সেনাদের মরদেহ।
রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ জেনারেল ভ্যালেরিসহ সামরিক বাহিনীর নেতৃস্থানীয় কর্মকর্তারা। রুশ বাহিনীর সম্ভাব্য হামলার জন্য আরও অস্ত্র ও সরঞ্জাম পাঠানোর জন্য বিভিন্ন দাতা দেশকে আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা।
এদিকে কর্নেল-জেনারেল আলেক্সান্দার লাপিনকে স্থলবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে রাশিয়া। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধে নেতৃত্বের জন্য ইতিমধ্যে লাপিনের সমালোচনা শুরু হয়েছে। তিনি এর আগে রাশিয়ার সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের কমান্ডার ছিলেন। এর আগে ইউক্রেনে সামরিক নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আনে মস্কো।
এদিকে ইউক্রেনকে আরও সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ন্যাটো। পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর সামরিক জোটের প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ মঙ্গলবার বলেন, ‘ন্যাটো ও ইইউর মধ্যে অংশীদারত্বকে আমরা নতুন একটি উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।’ পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে বিভাজন তৈরিতে পুতিনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি তাঁর।