খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা সদরে ও দীঘিনালা উপজেলা সদরে পাহাড়িদের দোকানপাত ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাত ও হত্যা ঘটনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্লে কার্ড নিয়ে যুক্তরাস্ট্রের হাভার্ড স্কোয়ারে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি শহরে আদিবাসী হত্যা, অগ্নিসংযোগসহ সারা বাংলাদেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু হত্যা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলার প্রতিবাদে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঐতিহাসিক Harvard Square-এ আজ ২৩ সেপ্টেম্বর এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যুক্তরাস্ট্রের ম্যাসাচ্যুসেটস অঙ্গরাজ্যের আদিবাসী পরিবারসহ বাংলাদেশি হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন এ প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহন করেন।
পার্শ্ববর্তী বিশ্ববিদ্যালয় – এমআইটি থেকেও একদল ছাত্র-ছাত্রী এ প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহন করেন এবং সংহতি প্রকাশ করেন। গাজা উপত্যাকা থেকে পার্বত্য চট্রগ্রাম পর্যন্ত পৃথিবীর সব জায়গাতে মানবাধিকার বিপর্যয়ের প্রতিবাদ জানান তারা এবং বাংলাদেশে আদিবাসীদের ন্যায্য আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করেন।
এ প্রতিবাদ সভায় বোস্টনস্থ বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক কর্মী মহিতোষ তাপস পরিচালনায় জাতীয় সংগীত এবং একাধিক দেশত্ববোধক সংগীত সমবেত কন্ঠে পরিবেশন করা হয়।
ঘটনার সুত্রপাত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরে নোয়াপাড়ায় মোঃ মামুন নামে একচোর মোটরসাইকেল চুরি করে পালাতে গিয়ে মোটরসাইলসহ বিদ্যুতের খুঁটির সাথে ঢাক্কা খেয়ে মারা যায়। মামুন সদরের শালবন এলাকার অধিবাসী।
সেই ঘটনাকে কেন্দ্র ১৯সেপ্টেম্বর দীঘিনালা কলেজ হতে সেটেলার বাঙালিরা মিছিল বের করে এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পাহাড়িদের ১০২টি বাড়িঘর, দোকানপাতে অগ্নি সংযোগ, লুটপাত ও একজনকে পিঠিয়ে হত্যা করেছে এবং এ ঘটনায় ৫০জনের অধিক আহত হয়েছে।
এ ঘটনা জানাজানি হলে খাগড়াছড়িতে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ জানাতে ছাত্র/ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে আসে এবং তাদের ছত্রভঙ্গ করতে আইন শৃংখলাবাহিনীর গুলিতে ২জন নিহত হয় ও ২০জন গুলিবিদ্ধ হয়। দীঘিনালায় ও খাগড়াছড়িতে সংগঠিত ঘটনার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে ২০সেপ্টেম্বর প্রতিবাদ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী জুম্ম ছাত্র/ছাত্রীরা। এ সময় উছশৃংখল বহিরাগত বাঙালিরা মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দেশিয় অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর হামলা করে একজনকে হত্যা করেছে এবং ১০০ অধিক আহত হয়েছে । গুরুতর আহতদের রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাহাড়িদের দোকানপাতে অগ্নিসংযোগ ও আঞ্চলিক পরিষদে অগ্নিসংযোগ করে তারা চলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সন্ধ্যায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে গণবিজ্ঞপি প্রচার করে।
সংগঠিত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী জুম্ম ছাত্র/ছাত্রীরা তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ঘন্টা সড়ক নৌ পথের অবরোধ কর্মসূচীর ডাক দেয়। অপর দিকে রাঙ্গামাটির বাস ট্রাক অটোরিক্সা চালক সমিতি গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় যা ২২সেপ্টেম্বর প্রশাসনের সাথে মিটিং করে প্রত্যাহার করে।