মানবাধিকার কর্মকর্তা সাজিয়ে আমেরিকায় মানবপাচার, চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ৫

0
92
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

মানবাধিকার কর্মকর্তা সাজিয়ে আমেরিকা ও ফ্রান্সসহ উন্নত দেশগুলোয় মানবপাচারে জড়িত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। চক্রের হোতা মহিউদ্দিন জুয়েল ও উজ্জল হোসাইন মুরাদ ‘প্রোটেকশন ফর লিগ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন’ নামে কথিত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের আড়ালে এ অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন। তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কনফারেন্সে অংশ নেওয়ার কথা বলে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ভুয়া তথ্যযুক্ত ই-মেইল পাঠিয়ে আমন্ত্রণপত্র আনত।

মঙ্গলবার মিন্টো রোডে  নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আমেরিকার ভিসা সংগ্রহকারী চক্রের পাঁচজনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। পরে গত ২১ মে অতিরিক্ত উপকমিশনার মহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

হারুন অর রশীদ বলেন,  গ্রেপ্তারদের মধ্যে চক্রের দুই হোতা টাকার বিনিময়ে ২০১৯ সাল থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে উন্নত দেশগুলোয় মানবপাচার করে আসছিল। তাদের প্রতিষ্ঠানে লোকজন বিভিন্ন ধরনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য যায়। তখন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক উজ্জল হোসাইন ও চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন জুয়েল তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে ইউরোপ আমেরিকায় পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়।

প্রতারণার কৌশল সম্পর্কে ডিবিপ্রধান জানান, প্রতারকরা নিয়মিত জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড স্যোশাল কাউন্সিলের বিভিন্ন কনফারেন্সের বিজ্ঞপ্তিগুলোর খোঁজ রাখত। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরপরই তারা নিজেদের নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয়ে কনফারেন্সে অংশ নেওয়ার জন্য জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ই-মেইল পাঠাত।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার এনামুল হাসান উপপরিচালক, শাহাদাদ কমিউনিকেশন অফিসার, হাদিদুল মুবিন উপ-পরিচালক সেজে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ১৭ থেকে ২৮ এপ্রিল এবং ৪ মে আদিবাসী ইস্যুতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা বলে জাতিসংঘের আমন্ত্রণপত্র নেয়। পরে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে হাজির হয়ে নিজেদের এনজিওর নামে তৈরি জাল কাগজপত্রসহ ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদন করে।

ডিবির  এ কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজের ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে যেসব ব্যক্তি প্রকৃতভাবে মার্কিন ভিসা পাওয়ার আবেদন করেন, তারা নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অর্থের পরিমাণ এবং সেগুলো তারা কোথায় বিনিয়োগ করেছে বা বিদেশে পাচার করেছে কি-না সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.