অস্কারজয়ী অভিনেত্রী চার্লিজ থেরন সম্প্রতি নিজের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ঘটে যাওয়া একটি অপ্রীতিকর ঘটনার কথা জানিয়েছেন। ‘দ্য ওল্ড গার্ড ২’ ছবির প্রচারে ‘কল হার ড্যাডি’ পডকাস্টে হাজির হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান অভিনেত্রী। সেখানেই এক পরিচালকের কাছ থেকে অপ্রীতিকর প্রস্তাব পাওয়ার কথা জানান তিনি। এর আগেও থেরন বিষয়টি বলেছিলেন, ২০১৯ সালে হাওয়ার্ড স্টার্নের শোতে। এবার তিনি আরও বিশদে সেই ঘটনাটি নিয়ে কথা বললেন।
থমকে যাওয়া সেই রাত
পরিচালকের বাড়িতে গিয়ে অপ্রীতিকর অবস্থায় পড়েছিলেন শার্লিজ থেরন। সেই রাতটির কথা বলতে গিয়ে থেরন বলেন, ‘আমি তখন জানতাম না যে অভিনয়ের অডিশন কেমন হয়, কীভাবে, কোথায় যেতে হয়। এজেন্সি আমাকে বলেছিল, একটা সিনেমার কাস্টিং হচ্ছে। যেতে হবে শনিবার রাতে। জায়গাটা ছিল ওই পরিচালকের বাড়ি।’

থেরন যোগ করেন, ‘নিজের ভেতরে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আমাকে সতর্ক করেছিল। মনে হচ্ছিল, জায়গাটা সুবিধার নয়। আবার মনে হচ্ছিল, অভিনয়ের দুনিয়া হয়তো এমনই। এখানে হয়তো এ ধরনের পরিবেশই স্বাভাবিক।’
থেরন জানান, তিনি হাজির হওয়ার পরই ওই পরিচালক দরজা খুলে পায়জামা পরে আসেন। এরপর থেরনের অভিযোগ, পরিচালক তাঁর হাঁটুর ওপর হাত রাখেন। ‘আমি সঙ্গে সঙ্গে উঠে চলে আসি’, বলেন তিনি।
চিঠিতে ভুল বোঝার ব্যাখ্যা, থেরনের প্রত্যাখ্যান
কয়েক বছর পর থেরন যখন জনসমক্ষে ঘটনাটি বলেন, সেই পরিচালক বিষয়টি বুঝতে পারেন যে তাঁর কথাই বলা হচ্ছে। পরে থেরনকে একটি চিঠি পাঠান—যেখানে নিজের আচরণকে ব্যাখ্যা করে জানান, থেরন ‘ভুল বুঝেছেন’।
‘এটা খুবই ক্লিশে ব্যাপার নয়? এমন কিছু করলে, পরে বোঝানোর চেষ্টা করবে, তুমি ঠিক বোঝোনি। চিঠিটা ছিল একদম ভুয়া। নিজের ভয় ঢাকতেই সে লিখেছিল’, বলেন থেরন।

অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমি ইচ্ছা করেই কখনো তার নাম নিইনি। কারণ, আমি চাই না, এই ঘটনা তাকে কেন্দ্র করেই ঘুরে বেড়াক। এটা তাকে রক্ষা করার জন্য নয়। বরং আমি চাই, সে জানুক, আমি চাইলে তার নাম বলে দিতে পারি এবং সেটা হলে সে চাপে পড়ে যাবে।’
থেরনের ভাষায়, ‘আমি এমন কেউ না যে চুপ করে সব সহ্য করব। আমি তার নাম বলব না, কারণ সে নিজেই জানে, সে-ই ওই ব্যক্তি। আমি চাই, সে এই অনিশ্চয়তায় থাকুক—জানতে না পারুক, কখন আবার এই প্রসঙ্গ উঠবে, কখন আমি আবার নাম করে বলব।’
অডিশনের নামে ‘শিকার’ বানানোর চেষ্টা
ঘটনার রাতে পরিচালকের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন থেরন। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি জানতাম, আমি কোনো চরিত্র পেতে যাচ্ছি না। আমি ওর সিনেমায় কী যোগ করতাম, সেটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। ওর কাছে আমি শুধু একটা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ ছিলাম—যেটা অভিনয় নয়।’
অস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী স্পষ্টভাবে বলেন, ‘সপ্তাহের কোনো দিনই আমি কাউকে আমার সঙ্গে এমন আচরণ করতে দেব না। কিন্তু কেউ যখন হঠাৎ করে এমন কিছু করে ফেলে, তখন মানুষ থমকে যায়। এ ঘটনা তাকে জীবনভর তাড়া করে বেড়ায়।’