পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, কার্যালয়ে জ্ঞান হারালেন অবরুদ্ধ অধ্যক্ষ

0
33
অবরুদ্ধ অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামকে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ বিকেল চারটার দিকে, ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে নওগাঁর হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের একপর্যায়ে আজ বুধবার বিকেলে তিনি নিজ কার্যালয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এরপর তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এর আগে গত রোববার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। আজ সকাল ১০টার দিকে ওই অধ্যক্ষ কলেজে এলে শিক্ষার্থীরা তাঁকে তাঁর কার্যালয়ে অবরুদ্ধে করে রাখেন। অবরুদ্ধ অবস্থায় বেলা তিনটার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কাকলী হক বলেন, আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে অচেতন অবস্থায় একজন শিক্ষককে হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, উনি স্ট্রোক করেছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহীতে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামের বড় ভাই আবু নাছের আহম্মেদ বলেন, নুরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে রোববার থেকে তাঁর প্রতিষ্ঠানের কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী ও বহিরাগত লোকজন আন্দোলন করছিলেন। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম রবীন শিষ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও অধ্যক্ষকে নিয়ে সভা করেন এবং উভয় পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে দেন। আজ সকালে নুরুল ইসলাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেলে কিছু শিক্ষার্থী তাঁকে বিগত সময়ের কিছু হিসাব বুঝিয়ে দিতে বলেন। নুরুল ইসলাম হিসাব-নিকাশ বুঝিয়ে দেওয়ার একপর্যায়ে বেলা দুইটার দিকে বহিরাগত কিছু লোক তাঁর কার্যালয়ে ঢুকে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও তাঁকে টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। একপর্যায়ে নুরুল ইসলাম সেখানে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও এস এম রবীন শিষ বলেন, কয়েক দিন ধরেই কলেজের অধ্যক্ষকে নিয়ে অস্থিরতা চলছিল। গতকাল উভয় পক্ষের সঙ্গে তিনি সভাও করেছেন। উভয় পক্ষের মধ্যে একটা সমঝোতার মধ্য দিয়ে সভাটি শেষ হয়। কিন্তু আজ আবারও প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা দেখা দেয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান অস্থিরতা বন্ধে কাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আরেকটি সভা ডেকেছেন। যেখানে উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.