পঞ্চগড়ে আহমদিয়াদের ওপর হামলার ঘটনায় আরও ৩টি মামলা, গ্রেপ্তার ৮

0
170
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ফুলতলা এলাকায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ঘর

এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক অভিযান ও নজরদারিতে জেলা শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আজ জুমার দিন হওয়ায় জেলা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ও বিভিন্ন মসজিদে অতিরিক্ত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। জেলা শহরের উপকণ্ঠে আহম্মদনগর ও শালশিড়ি এলাকার আহমদিয়া সম্প্রদায়ের দুটি মসজিদে এবং তাঁদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

ঘটনার পর থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ১৩টি মামলায় মোট ১৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর বিকেলে ও রাতভর অভিযান চালিয়ে আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে জেলা শহরের আশপাশের এলাকাগুলোতে গ্রেপ্তার অভিযান চলায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে নিরাপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হবে না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার রাতে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের তরুণ জাহিদ হাসানকে হত্যার অভিযোগে পঞ্চগড় পৌর শহরের দক্ষিণ রাজনগর এলাকার ঈসমাইল হোসেন (২৫) এবং তুলারডাঙ্গা এলাকার মো. রাসেলকে (২৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুজনই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদ হাসানকে পিটিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে  দাবি করেছে পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা আজ দুপুরে মুঠোফোনে  বলেন, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা সদস্যদের নিয়ন্ত্রণে জেলার পরিবেশ বর্তমানে স্বাভাবিক আছে। এখন পর্যন্ত মোট ১৬টি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে মোট ১৭৩ জন। তবে আজ জুমার দিন হওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী কাজ করছে। তবে ভিডিও ফুটেজ দেখে, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং যাচাই–বাছাইয়ের মাধ্যমে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কোনো নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হবে না।

সারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে পঞ্চগড়ে বর্বরোচিত হামলা: পুলিশ সুপার

পঞ্চগড় শহরের পাশে আহম্মদনগর এলাকায় আহমদিয়া জামাতের জলসা বন্ধের দাবিতে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর পঞ্চগড় শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মিছিল বের করা হয়। এতে পুলিশ বাধা দেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একদল বিক্ষোভকারী আহম্মদনগর এলাকায় গিয়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় দুই তরুণ নিহত ও পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন।

সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়েন। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আহমদিয়াদের জলসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.