নুসরাত হত্যায় মাদ্রাসা চেয়ারম্যানের নিষ্ক্রিয়তার সত্যতা পাননি তদন্ত কর্মকর্তা।

0
335
নুসরাত জাহান।

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির মায়ের করা মামলায় একমাত্র আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা কারাগারে থাকায় মামলার বিষয়ে তাঁর (অধ্যক্ষ) সরাসরি কিছু করার নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এনামুল করিমের এ বক্তব্য আইনসংগত।

নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় পি কে এনামুল করিমের নিষ্ক্রিয়তার সত্যতা পাননি ওই ঘটনা তদন্তে থাকা কর্মকর্তা। মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা কর্তৃক শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানির ঘটনায় সভাপতির নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের (রাজস্ব) তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য এসেছে।

প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়েছে, আকর্ষিক ও পারিপার্শ্বিকতায় ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. অহিদুজ্জানের দেওয়া লিখিত বক্তব্যে উল্লেখিত ‘এডিএম পি কে এনামুল করিমের নিষ্ক্রিয়তা বা অবহেলার কথা বর্ণনা করে কিছু কিছু গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে, তারও সত্যতা পাওয়া যায়নি’ মর্মে দেওয়া বক্তব্যটি প্রণিধান যৌক্তিক বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে আজ এই প্রতিবেদনের ওপর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে মধ্যাহ্ন বিরতির পর শুনানির কথা রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ ৩০ জুন ওই রিটটি করেছিলেন।

৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় হাত-পা বেঁধে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা চালান মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার অনুগত ব্যক্তিরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল নুসরাত মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই অসহযোগিতার অভিযোগ ছিল। দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে পুলিশ সদর দপ্তর পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির দায়িত্বশীল একটি সূত্র নিশ্চিত করে, নুসরাতের মা তাঁর বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ আনেন।

ফেনীর একাধিক সূত্র জানায়, যাঁর বিরুদ্ধে নুসরাতের মায়ের অভিযোগ, ফেনীর সেই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি কে এনামুল করিম সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি। ওই মাদ্রাসারই অধ্যক্ষ ছিলেন সিরাজ উদদৌলা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এর আগেও মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও অর্থ তছরুপের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি ব্যবস্থা নেননি। নুসরাতকে হত্যার ঘটনায় প্রশাসনের কোনো ভুলত্রুটি ছিল কি না, খতিয়ে দেখতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, পি কে এনামুল করিম ওই কমিটিরও প্রধান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.