নির্বাচিত সরকার পেতে সারজিসের দুই পরামর্শ

0
25
সমন্বয়ক সারজিস আলম
জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাইলে সব রাজনৈতিক দল ও দেশবাসীকে দুটি কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।
 
তিনি বলেন, দেশের সিস্টেমগুলোতে ক্যান্সার ধরেছে। যত দ্রুত সম্ভব ক্যান্সার নির্মূল করে জনগণের ভোটের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার আনতে হবে। এটার জন্য দুটি কাজ আমাদের করতেই হবে। এক: আমাদের ধৈর্য্য ধরে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে, দুই: আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ, দলাদলি ও মুখোমুখি হবার যে ট্রেডিশন, সেটি থেকে কিছু সময়ের জন্য বিরত হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
 
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
 
সারজিস আলম বলেন, আমরা যদি বিগত সময়ের কাজগুলো থেকে শিক্ষা না নিই তাহলে শেখ হাসিনা, সালমান এফ রহমান, ডিবি হারুনের মতো একই অবস্থা হবে। সেটা আজ হোক, আর দশ বা ষোল বছর পরই হোক, ওই একই অবস্থা হবে। গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা কোনো অথোরিটি নয়। আমরা একটা প্রেশার গ্রুপ। আমরা যদি কিছু করতে চাই, তা অবশ্যই আইনগতভাবে হতে হবে। আমাদের কেউ যেন ক্ষমতার অপব্যবহার না করি।
 
তিনি বলেন, আমাদের আজকের অনুষ্ঠানে অসংখ্য ভাই এসেছেন, যারা আজকে নির্দ্বিধায় পাঞ্জাবি-টুপি-পায়জামা পরে আসতে পেরেছেন। এটাই চব্বিশের ছাত্র-জনতার সবচেয়ে বড় স্বাধীনতা। কারণ বিগত ১৬ বছরে এসব কাপড় পরিধান করলে তাদেরকে ইচ্ছে মতো ট্যাগ দেওয়া হয়েছে।
 
সারজিস বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে হবে। দেশকে ১০০ বছর এগিয়ে নিতে চাইলে আমাদের কোয়ালিটিফুল রিসোর্স লাগবে। বাংলাদেশে ভারতসহ বিদেশের অসংখ্য দেশ তাদের জনবল দিয়ে এখান থেকে লক্ষ কোটি ডলার নিয়ে যায় বেতন হিসেবে। আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ওই কাজগুলোর জন্য নিজেদেরকে কোয়ালিটিফুল হিসেবে গড়ে তোলা। ২০২৪ সালের স্পিরিটকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বাঁচাতে হবে। মাদকের ছোবল, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার থেকে বাঁচাতে হবে। নীতি-নৈতিকতা ও পারিবারিক শিক্ষার পাশাপাশি শৃঙ্খল হতে হবে।
 
রংপুর বিভাগকে অন্যান্য বিভাগের মতো এগিয়ে রাখতে হলে দ্বিতীয় সারিতে না রাখার দাবি জানান এ ছাত্রনেতা। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা শুনেছি কিন্তু বিগত সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি। ফ্যাসিস্ট সরকার পদ্মা সেতু এবং পদ্মা রেল সেতু করতে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। অথচ রংপুরের তিস্তাপাড়ের কোটি মানুষ প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা দরকার ছিল সেটি ওই ফ্যাসিস্ট সরকার করতে পারেনি। বাংলাদেশে এ গ্রেডের কিছু জেলা ও প্রথম সারির কিছু সিটি কর্পোরেশন যেই বাজেট পায় বছরে, পুরো রংপুর বিভাগ সেই বাজেট পায়নি ১৬ বছরে।
 
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম, রকিব মাসুদ, আবু সাঈদ লিয়ন ও আব্দুল মুনঈম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এস আই শাহিন, মিশু আলি সুহাস, জহির রায়হান, ফিহাদুর রহমান, সুমন কিবরিয়া, সজিব ইসলাম, আব্দুর রউফ, ইমরান আহমেদ প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.