কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ঘুরতে এসে গড়াই নদীতে নেমে নিখোঁজের প্রায় ৪৩ ঘণ্টা পরে পানিতে ভেসে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীর মরদেহ। বুধবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রেললাইনের কুমারখালীর গড়াই রেলসেতু এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
মৃত ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. তানভির (২৩)। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তানভির বরগুনা জেলার সদর থানার নলী চরকগাছিয়া গ্রামের মো. আব্দুল মালেকের ছেলে। তার বাবা বরগুনা সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
সমকালকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পরিদর্শক মো. বখতিয়ার উদ্দিন। তিনি বলেন, সকাল ৭টা থেকে তারা তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। সকাল সোয়া ১১টার দিকে সেতু এলাকায় নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মরদেহটি ভেসে ওঠে। তারা উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার একটি হায়েস গাড়ি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ১৩ জন শিক্ষার্থী মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ঘুরতে আসেন। তারা প্রথমে মেহেরপুরের মুজিবনগর, পরে কুমারখালীর শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী ও লালন আখড়াবাড়ি দেখেন। এরপর আটজন গড়াই নদীর রেলসেতুর নিচে গোসল করতে নামেন। বিকেল পৌনে চারটার দিকে তাদের মধ্যে তিনজন সাঁতরে গড়াই নদী পার হওয়ার চেষ্টা করেন। ওপারে পার হওয়ার সময় দুই বন্ধু তীরে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু তানভীর পানির স্রোতে তলিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে সেখানে কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ও খুলনা ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। প্রায় ৪৩ ঘণ্টা পরে বুধবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে সেতু এলাকায় মরদেহটি ভেসে ওঠে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মিরা মরদেহটি উদ্ধার করে।
থানার ওসি মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, নিখোঁজ ঢাবি শিক্ষার্থীর ভাসমান মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।
ইউএনও বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, উদ্ধার অভিযান চলাকালীন সময়ে মরদেহটি ভেসে উঠেছে। সে সাঁতার জানতো না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- এটি একটি দুর্ঘটনা। এখন পর্যন্ত স্বজনদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি পুলিশ দেখছে।