নারী কক্ষে ভোট নিতে সময় লাগছে বেশি, লম্বা সারিতে দীর্ঘ অপেক্ষা

0
150
নীলের পাড়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে নারী ভোটারদের লম্বা সারি। বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের চিত্র

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পুবাইল এলাকার নীলের পাড়া উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র। হাসি বেগম ও তাঁর ভাগনি সালমা আকতার এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ভোটকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা বললেন, রোদ অনেক। লাইন এগোচ্ছে না। এখনো সামনে অনেক মানুষ। আর বেশি দেরি হলে চলে যাবেন।

হাসি বেগম ও সালমা বেগমের সঙ্গে কথা হয় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টায়।
কেন্দ্রটি ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। আজ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রটি ঘুরে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি ভালো। নারী ও পুরুষ—দুই সারিতেই ভোটাররা অপেক্ষা করছেন।

দুপুর সাড়ে ১২টায় হাসি বেগম ও সালমা বেগমকেও সারিতে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তাঁরা ছিলেন কেন্দ্রটির ৫ নম্বর নারী কক্ষের সারিতে। তখনো তাঁদের সামনে ছিলেন ২০ জন।

কেন্দ্রটির মোট ভোটার ২ হাজার ৫৯৯। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৬৫৪টি। অর্থাৎ ভোট গ্রহণ শুরুর ৪ ঘণ্টায় এই কেন্দ্রে ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে, তবে নারীদের ভোটের হার কম।

প্রায় দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুবর্ণা আক্তার। গাজীপুর মডেল একাডেমি কলেজের এই শিক্ষার্থী বলেন, অনেক রোদ, তাই দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। লাইন অনেক আস্তে আস্তে এগোচ্ছে। বয়স্কদের বেশি কষ্ট হচ্ছে।

৫ নম্বর নারী কক্ষের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এ কে এম ফজলুল হক বলেন, অনেক বয়স্ক নারী ভোটারকে বারবার করে বুঝিয়ে দিলেও জড়তার কারণে ইভিএমের বিষয়টি বুঝতে পারছেন না তাঁরা। অনেকের আঙুলের ছাপই মিলছে না। কয়েকবার ভ্যাসলিন মাখিয়েও কাজ হচ্ছে না। এই কারণেই দেরি হচ্ছে।

নীলের পাড়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ হাজার ৫৯৯। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ হাজার ৩৪৪ জন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৭১টি। অর্থাৎ ভোটের হার ২০ শতাংশ। এর বিপরীতে পুরুষ ভোটার ১ হাজার ২৭৭। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৩৮৩টি, ভোট পড়ার হার ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ পুরুষের তুলনায় নারী ভোট প্রায় ১০ শতাংশ কম পড়েছে।

ভোট নিতে এমন ধীরগতির কারণে সঠিক সময়ে ভোট শেষ করার ব্যাপারে শঙ্কা প্রকাশ করলেন নারী কক্ষে রেডিও প্রতীকের এজেন্ট আসুফা আকতার। তিনি বলেন, ‘বয়স্ক নারী ভোটারদের ভোট দিতে সময় লাগছে অনেক। এভাবে ভোট নিলে তো সঠিক সময়ে ভোট শেষ হবে না। আমরা সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের বারবার অভিযোগ জানিয়েছি।’

নীলের পাড়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ৪টি পুরুষ ভোটকক্ষে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে যথাক্রমে ৯৯, ১০৮, ৯১ ও ৮৫টি। আর নারীদের ৪টি ভোটকক্ষে ভোট পড়েছে যথাক্রমে ৭৩, ৫৭, ৫০ ও ৯১টি। প্রতিটি কক্ষে ভোটার রয়েছেন ৩৩৬ জন করে। নারী কক্ষগুলোর তুলনায় পুরুষ কক্ষগুলোয় ভোট পড়েছে বেশি। পুরুষদের ২ নম্বর ভোটকক্ষে ৭ নম্বর নারী ভোটকক্ষের দ্বিগুণের বেশি ভোট পড়েছে।

নীলের পাড়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, বয়স্ক নারীদের ইভিএম মেশিনের বিষয়ে জ্ঞান কম। তাঁদের ভোট দিতে সময় বেশি লাগছে। আঙুলের ছাপ মেলাতেও সময় যাচ্ছে। তবে লাইনে দাঁড়িয়ে যাতে কষ্ট না হয়, সে জন্য বয়স্ক নারীদের আগে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতিও বেড়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.