নারীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে: রাশেদা কে চৌধূরী

0
26
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন: রাজনৈতিক দলের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নারীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন কি না, সেটা নিয়ে সর্বস্তরে আস্থার সংকট আছে বলে মনে করছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী।

নারীদের ভোটাধিকার নিয়ে একটি উঠান বৈঠকের আলোচনার খণ্ডাংশ তুলে ধরে রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘সাধারণ মানুষ বলছে, ভোট না হয় না দিলাম। কিন্তু আমার ভোটটা যদি অন্য কেউ দিয়ে দেয়? এই যে আস্থার সংকটটা, এইটা আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে। এটা আস্থার সংকটটা আছে মানুষের মনের মধ্যে যে আমরা যথাযথভাবে আমাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারব কি না? সেটা সর্বস্তরে আছে।’

‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচন: রাজনৈতিক দলের কাছে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন রাশেদা কে চৌধূরী। একশনএইড বাংলাদেশ ও প্রথম আলোর আয়োজনে আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এ গোলটেবিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দেশের নয়টি জেলায় আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক থেকে উঠে আসা সুপারিশগুলো তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশের উইমেন রাইটস লিড মরিয়ম নেছা। গোলটেবিল বৈঠকটি পরিচালনা করেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।

নির্বাচনে নারীদের প্রার্থী করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা না থাকলে দেশের নারীরা এগিয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন না বলে উল্লেখ করেন রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো অনেক বেশি কমিটমেন্ট বা সদিচ্ছা না দেখায়, তাহলে নারী পারবে না। মানি (অর্থ), মাসল পাওয়ারের (পেশিশক্তি) যে প্রভাব বিগত সব নির্বাচনে কমবেশি দেখা গেছে, সেখানে নারী প্রান্তিক হয়ে যাবে।’

নির্বাচনকালে নানা শঙ্কার কথা তুলে ধরে রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘একটা হচ্ছে সুষ্ঠু, আরেকটা হচ্ছে অন্তর্ভুক্তিমূলক, আরেকটা হচ্ছে যে সহিংসতা। নারীর বিষয়ে আরেকটি মানে উদ্বেগের জায়গা উঠে আসে নির্বাচন–পূর্বে এবং নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতার জায়গা।’ সে জন্য সব রাজনৈতিক দলের প্রতিশ্রুতি থাকা জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

‘দুর্নীতি দমন ও বিচার বিভাগের খুবই প্রয়োজন’ উল্লেখ করে রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য একেবারে লুটপাট, দুর্নীতি—সবই বন্ধ করা সম্ভব, মানে একটা মিনিমাম জায়গায় আনা সম্ভব, যদি বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে।’

বাংলাদেশে নারীরা সবচেয়ে বেশি বিচারহীনতার শিকার হচ্ছেন বলে মনে করেন রাশেদা কে চৌধূরী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারাই কিন্তু বিচার পাচ্ছে না। কোথাও যখন নির্যাতিত হচ্ছে, রাস্তাঘাটে হোক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হোক অথবা কর্মস্থলে হোক, সে তো বিচার পাচ্ছে না।’

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, আগামী সরকারের কাছে দুটো বড় মাপের প্রত্যাশা থাকবে। সেটা হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা আর সুশাসন।

গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রশান্ত ত্রিপুরা, নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের সংগঠক মাহরুখ মহিউদ্দিন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক নাজিফা জান্নাত অংশ নেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.