নারায়ণগঞ্জে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, স্বামী আটক।

0
471
গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার বর্ষা ।

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে যৌতুকের দাবীতে সুমাইয়া আক্তার বর্ষা নামের এক গৃহবধূকে (২১) শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান নয়নকে আটক করেছে। সোমবার রাতে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের আলী সাহারদী এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত বর্ষার স্বজনরা জানান, ২০১৩ সালে আলী সাহারদী এলাকার শহিদুল্লাহ মিয়ার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান নয়নের সাথে রাজধানীর কদমতলী থানার দনিয়া শরাইল এলাকার বাসিন্দা মনজুর ভূঁইয়ার বড় মেয়ে সুমাইয়া আক্তার বর্ষার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র বাবদ দশ লাখ টাকা খরচ করে বর্ষার পরিবার। বর্ষার সংসারে সাড়ে চার বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।

বর্ষার বাবা মনজুর ভূঁইয়ার অভিযোগ, গত প্রায় এক বছর আগে নিজের জমি বিক্রি করে বেশ কিছু টাকা হাতে পান তিনি। তবে টাকা হাতে পেয়ে সেই টাকা নিজের ব্যবসায় বিনিয়োগ করে ফেলেন। জমি বিক্রি করে তিনি টাকা পেয়েছেন সেই খবর জানতে পেরে মেয়ের জামাতা নয়ন ব্যবসা করার অজুহাতে বর্ষার মাধ্যমে তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ নিয়ে নয়ন ও বর্ষার মধ্যে পারিবারিক কলহ চলতে থাকে। দাবিকৃত সেই টাকা এখন পর্যন্ত না দেয়ার নয়ন তার স্ত্রী বর্ষার উপর বেশ কিছুদিন যাবত মারধর সহ নানাভাবে শারিরীক নির্যাতন করে আসছে। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে এ পর্যন্ত প্রতিদিনই বর্ষাকে মারধর করতো নয়ন। দাবিকৃত টাকার অজুহাতে সোমবার রাতে নয়ন তার স্ত্রী বর্ষাকে আবারো মারধর করে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

বর্ষার ছোট বোন মীম জানায়, সোমবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে বর্ষা তাকে ইমোতে ফোন করে খুব কান্নাকাটি করে। স্বামী নয়ন প্রতিদিন মারধর করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেছে বলে জানায়। এই বাড়িতে থাকলে স্বামী নয়ন মারধর করে মেরে ফেলবে এই ভয়ে বর্ষাকে বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বোনকে অনুরোধ করে। প্রায় এক ঘণ্টা দু’বোনের মধ্যে কথা হয়।

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, নিহত বর্ষার মরদেহের সুরতহাল পর্যবেক্ষণে গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বর্ষার বাবা মনজুর ভূঁইয়া বাদি হয়ে বর্ষার স্বামী নয়নকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলা গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.