নতুন বলের কৌশল নিয়ে আসছেন ল্যাঙ্গেভেল্ট।

0
1001
চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্ট।

চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্ট তখন বিমানবন্দরের পথে। নতুন চাকরিতে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে বিমান ধরবেন। ঠিক তখনই ফোনে পাওয়া গেল তাকে। বাংলাদেশের সাংবাদিক পরিচয় দিতেই বললেন, ‘বিমানবন্দরে পৌঁছে ফোন দিচ্ছি।’ এর ২০ মিনিটের মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো প্রশ্নের উত্তর ‘ভয়েস’ রেকর্ড করে পাঠালেন। তিনি জানালেন, নতুন চাকরির প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট আর ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজে পেস বোলারদের কাছ থেকে সেরাটা আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। এরপর রুবেল-মুস্তাফিজদের দেশের পাশাপাশি বিদেশের কন্ডিশনের জন্য কার্যকর বোলার হিসেবে গড়ে তোলার কাজে হাত দেবেন তিনি। নতুন এই পেস বোলিং কোচ স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকায় আসছেন আজ সকাল সোয়া ১০টায়। জাতীয় দলের প্রধান কোচ তারই স্বদেশি রাসেল ডমিঙ্গো ঢাকায় পা রাখবেন বিকেল ৫টায়। কাল একসঙ্গেই বিসিবির চাকরিতে যোগ দেবেন তারা। নতুন এই পেস বোলিং কোচের প্রধান লক্ষ্য থাকবে নতুন বলে উইকেটশিকারি বোলার খুঁজে নেওয়া।

সেপ্টেম্বরের হোম সিরিজে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে পেস বোলারদের সফল করতে চান ল্যাঙ্গেভেল্ট, ‘এ মুহূর্তের পরিকল্পনা হলো আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলা ও জেতা। এরপর টি২০ বিশ্বকাপ আছে। সেখানে ভালো করার চ্যালেঞ্জ থাকবে। কারণ অস্ট্রেলিয়ায় সিমিং কন্ডিশন হবে। ওই কন্ডিশনে ভালো করতে হলে পেস বোলারদের কার্যকর বোলিং করতে হবে।’ যদিও দেশের কন্ডিশন পেস বোলিংবন্ধব থাকে না। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বে তিন পেসার খেলালেও গত বছর থেকে বিদেশি দলগুলোর সঙ্গে আবারও স্পিন ট্র্যাক বানাতে দেখা গেছে। টেস্টে এক পেসার নিয়েই খেলে বাংলাদেশ। একাদশে দুই পেসার রাখলেও বোলিংয়ে আনা হয় মূলত স্পিনারদেরই। বাংলাদেশ দলকে এই প্রথা থেকে বের করে আনতে হলে পেস বোলারদের কার্যকর করে গড়ে তোলার গুরুদায়িত্ব ল্যাঙ্গেভেল্টকেই পালন করতে হবে ডমিঙ্গোর অধীনে।

যদিও ল্যাঙ্গেভেল্টের ভাবনা দেশের চেয়েও বিদেশের কন্ডিশনে পেস বোলারদের কার্যকর করে তোলা, ‘বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছি। আমি নিশ্চিত, বোলারদের উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হবো। লাইন ও লেন্থ নিয়ে কাজ করতে হবে পেসারদের। যাতে করে বোলাররা যে কোনো জায়গায় সঠিকভাবে ডেলিভারি দিতে পারে। বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে নতুন বলে উইকেট নেওয়ার কৌশলগুলোতে উন্নতি আনতে হবে।’

সীমিত ওভারের ক্রিকেটের চেয়েও টেস্টের জন্য পেস বোলারদের গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ হবে নতুন পেস বোলিং কোচের জন্য। কারণ এই ফরম্যাটে টাইগার শিবিরে ভালোমানের পেস বোলার নেই। একটানা বল করার মতো পেসার নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পেসারদের খেই হারিয়ে ফেলতে দেখা যায়। এই প্রতিবন্ধকতা থেকে টাইগার পেসারদের বের করে আনার চ্যালেঞ্জ নিলেন ৪৪ বছর বয়সী ল্যাঙ্গেভেল্ট, ‘টেস্ট ক্রিকেটেও নতুন বলে উইকেট নেওয়ার প্র্যাকটিসটা করতে হবে। বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে কীভাবে সফল হওয়া যায়, সে কৌশল রপ্ত করতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ভালো করার চ্যালেঞ্জ থাকে, যেখানে আমরা সফল হতে চাই।’

জাতীয় দলের নতুন কোচিং স্টাফের চারজনই দক্ষিণ আফ্রিকান। সেদিক থেকে পেস বোলারদের নিয়ে কাজ করা এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ভালো সুযোগ থাকবে তার সামনে। ল্যাঙ্গেভেল্টও সেটাই মনে করেন, ‘রাসেল ডমিঙ্গো, নিল ম্যাকেঞ্জি এবং রায়ান কুকের সঙ্গে কাজ করতে আমি উন্মুখ। আমার জন্য এটা নতুন একটা চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে ফাস্ট বোলিংয়ে উন্নতি আনতে হবে। যেমন ভারতের পেস বোলিং অ্যাটাক এখন বিদেশেও ভালো করছে। একইভাবে বাংলাদেশ যেন তিনজন সিমার নিয়ে খেলতে পারে, সেই টেকনিকগুলো শেখাব।’ ২০১৭ সালে খণ্ডকালীন সময়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের বোলিং কোচ ছিলেন তিনি। এরপর আফগানিস্তান দলে পেস বোলিং কোচ ছিলেন বিশ্বকাপ পর্যন্ত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.