নতুন উপাচার্য নিয়োগ: বিএসএমএমইউতে উত্তেজনা

0
97
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন উপাচার্য নিয়োগের পর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। নিয়োগ–পদোন্নতির পক্ষে–বিপক্ষে বিবদমান পক্ষগুলো পাল্টাপাল্টি মিছিল করছে। এ পরিস্থিতিতে সব ধরনের নিয়োগ, পদোন্নতি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বর্তমান উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

মো. শারফুদ্দিন আহমেদের মেয়াদ শেষ হবে ২৮ মার্চ। নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক দীন মো. নুরুল হককে। তাঁরা দুজনই চক্ষুবিশেষজ্ঞ। মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বরিশাল মেডিকেল কলেজ থেকে এবং নুরুল হক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বলছেন, এখন যে উত্তেজনা তার পেছনে আছেন মূলত এই দুই মেডিকেল থেকে পাস করা চিকিৎসকেরা।

গত বৃহস্পতিবার ও আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা পাল্টাপাল্টি মিছিল করেছেন। আজ সকালে কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপাচার্যের কাছে গিয়ে বলেন, সব ধরনের নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ রাখতে হবে। নিয়োগ–পদোন্নতি নতুন উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর ঠিক করবেন।

উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনি নতুন করে আর কোনো নিয়োগ দিয়ে যাবেন না। কোনো পদোন্নতিও দেবেন না। আজ একাডেমিক কাউন্সিলের একটি সভা ছিল। শারফুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সভাও বাতিল হয়েছে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত সরকারপন্থী চিকিৎসকেরাই বিএসএমএমইউর উপাচার্যের পদে বসেছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রাণ গোপাল দত্ত, কামরুল হাসান খান ও কনক কান্তি বড়ুয়া। সর্বশেষ মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের আগে তাঁদের প্রত্যেকে বিএসএমএমইউয়ে কোনো না কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে উপাচার্য সব সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে হয়েছেন। একমাত্র ব্যতিক্রম দীন মো. নুরুল হক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পদে কোনো দিন ছিলেন না।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে এসে একজন উপাচার্যের পদে বসবেন, এটা বেশ কিছু জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক মেনে নিতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি–ব্লকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অধ্যাপক বলেছেন, ‘অভ্যন্তরীণ দলাদলি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে জটিল করে ফেলেছে। বাইরে থেকে এসে হাল ধরা কঠিন হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজনে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা, নিজের আত্মীয়স্বজনদের নিয়োগ দেওয়া, জোড়াতালি দিয়ে বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা, চিকিৎসা নীতি না মেনে ত্রুটিযুক্ত কিডনি প্রতিস্থাপন করা, তদন্তের নাম করে সমস্যা ঝুলিয়ে রাখার মতো অভিযোগ উঠেছে মো. শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে। তিনি সব সময় দাবি করেছেন, এসব অভিযোগ ষড়যন্ত্রকারীদের।

মো. শারফুদ্দিন আহমদের সময় যাঁরা চাপে ছিলেন তাঁদের কেউ কেউ এখন শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছেন। ২৮ মার্চের মধ্যে এই উত্তেজনা আরও বেড়ে যাবে বলে কারও কারও আশঙ্কা।

তবে নতুন নিয়োগ পাওয়া উপাচার্য দীন মো. নুরুল হক এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করার চেষ্টা করব।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.