‘প্রান্ত হত্যাকাণ্ডে অশুভ শক্তির হস্তক্ষেপ আছে’

0
115
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী প্রান্ত মিত্র হত্যাকাণ্ডে অশুভ শক্তির হস্তক্ষেপ আছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য এই হত্যাকাণ্ড একটি অশুভ তৎপরতা। প্রান্ত মঙ্গলবার মাঝরাতে রাতে হাসপাতালে তার এক বন্ধুর আত্মীয়কে রক্ত দেওয়ার জন্য ছুটে যাচ্ছিলেন। তখনই তাকে দুস্কৃতিকারীরা নির্মমভাবে হত্যা করে।

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের কাছে সোপর্দ করা এই মুহূর্তে জরুরি। এর অন্যথা হলে বা পুলিশের নিস্ক্রিয়তা দেখা দিলে দেশপ্রেমিক জনগণ এর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘প্রান্ত তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তার পরিবারকে শান্ত্বনা জানানোর ভাষা জানা নেই। এর মুহুর্তে এই হত্যাকান্ডের ঘটনায়  আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

ঐক্য পরিষদের নিন্দা

ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী প্রান্ত মিত্র হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

বুধবার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিত্রয় ঊষাতন তালুকদার, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিও এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, প্রান্ত মিত্র হাসপাতালে তার এক বন্ধুর বোনকে  রক্তদান করতে গিয়ে সোমবার গভীর রাতে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এই হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্ত ও বিচার দাবি করেন নেতারা।

বিচার দাবি পূজা উদযাপন পরিষদের:বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রান্ত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন এবং হত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বন্ধুর বোনকে রক্ত দিতে সোমবার রাত ২টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে খুন হন ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স (বোটানি বিভাগ) তৃতীয়ে বর্ষের ছাত্র প্রান্ত মিত্র (২৩)। এর আধা ঘণ্টা পর শহরের আলীপুর সেতুর উত্তর পাশের সড়কের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের অম্বিকাপুর শ্মশানে প্রান্তর সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। এই খুনের নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ধারণা করছেন নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা। ঘটনার পর থেকে প্রান্তর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা পলাতক রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রান্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। গত সোমবার (২৪ জুলাই) ফরিদপুরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন শহরের ঝিলটুলী মহল্লার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জনি। প্রান্ত তার অনুসারী হিসেবে মিছিল নিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন। তবে সেখানে যাওয়ার আগে আলীপুরে শেখ রাসেল স্কয়ারে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় উদ্বোধনের সময় তার সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের একটি গ্রুপের মারামারি হয়।

এদিকে কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা থেকে সম্মেলনে যোগ দিলেও রহস্যজনক কারণে এ সম্মেলনে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। নতুন কমিটিতে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন ২৩ জন। তাদের মধ্যে পদ পাওয়া নিয়ে বিরোধ চলছিল। এরই মধ্যে সোমবার রাতে খুন হন প্রান্ত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.