ঢাকায় গ্যাসের গন্ধে আতঙ্ক: সমস্যার সমাধান হয়েছে, দাবি তিতাসের

0
120
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গতকাল সোমবার রাতে যে গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল, সে সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে দাবি করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। আজ মঙ্গলবার সকালে তিতাসের একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিতাসের দাবি, কোম্পানিটির জরুরি ও টেকনিক্যাল টিম রাতেই সমস্যার সমাধান করেছে। এখন আর কোথাও গ্যাসের গন্ধ নেই।

তিতাস গ্যাসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাখাওয়াত হোসেন আজ সকালে  বলেন, সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনে গ্যাসের চাপ বেড়ে যাওয়ার (ওভার-ফ্লো) কারণে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল, সেটা সমাধান হয়েছে।

কী কারণে গ্যাসের চাপ বেড়ে গিয়েছিল, তা জানতে চাইলে শাখাওয়াত হোসেন বলেন, মন্ত্রণালয়ের থেকে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, সেটাই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার কারণ। এর বাইরে বিস্তারিত বলতে পারবে সিস্টেম অপারেশন বিভাগ।

এর আগে গতকাল রাতে গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার কারণ জানায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। রাত ১২টার পর এক ফেসবুক পোস্টে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ঈদে শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনে গ্যাসের চাপ বেড়ে যাওয়ায় (ওভার-ফ্লো) গন্ধ বাইরে আসছে।’

এ নিয়ে নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘তিতাসের জরুরি ও টেকনিক্যাল টিম বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।’ পোস্টে তিতাস গ্যাসের হটলাইন নম্বর ১৬৪৯৬ তুলে ধরা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এই ফেসবুক পোস্ট নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনিও নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানান। ওই ফেসবুক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী লিখেছেন, ‘ঢাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় গ্যাসের গন্ধ পাওয়ার খবরে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ঢাকার গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

তবে প্রতিমন্ত্রী রাত ১২টার পর যখন এই ফেসবুক পোস্ট দেন, তখনো বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।

এর আগে রাত ১১টার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার খবর আসতে থাকে। মগবাজার, ইস্কাটন, রামপুরা, মহাখালী, পূর্ব রাজাবাজার, ক্রিসেন্ট রোড, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বাড্ডা ও হাজারীবাগের বাসিন্দারা এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ার কথা জানান। বিভিন্ন এলাকার মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্যাসের চুলা না জ্বালানো এবং দেশলাই না জ্বালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার খবর প্রথম আসে রামপুরা থেকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯–এ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। রামপুরার মোল্লাবাড়ি, রামপুরা বাজার ও তালতলা এলাকার রাস্তায় গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যায়।

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম রাত ১১টার দিকে  বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছেন। আমরা বিষয়টি তিতাসকে জানিয়েছি। তিতাসের লোকজন এসে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কিত অনেকে ফেসবুকে পোস্ট দেন। তাঁদের অনেকেও অভিযোগ করেন, তিতাসের জরুরি যোগাযোগের নম্বরে ফোন করে সংযোগ পাননি।

অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসেও ফোন করেন।

তবে আজ ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, কাল রাতে বেশ কিছু ফোন কলে এলেও আজ তেমন কোনো কল আসেনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.