দেশে ডেঙ্গুর টিকা প্রয়োগ করতে জাতীয় টিকাদান–সংক্রান্ত কারিগরি উপদেষ্টা গ্রুপের (নাইট্যাগ) পরামর্শ চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির আজ বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কমিটির সুপারিশ পেলেই টিকা প্রয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ বিকেলে রাজধানীর দুই সিটির এডিস মশার লার্ভা জরিপের ফলাফল নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চ্যুয়াল ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গত সোমবারের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংস্থার স্ট্র্যাটেজিক গ্রুপ অব এক্সপার্ট অন ইমিউনাইজেশন (সেজ) জাপানের তাকেদার তৈরি কিউডেঙ্গা টিকা ব্যাপক হারে ডেঙ্গু সংক্রমিত এলাকায় ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এ টিকা উপযোগী। আর এ টিকা ডেঙ্গুর চার ধরনের বিরুদ্ধেই কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ডা. আহমেদুল কবির বলেন, ‘সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিউডেঙ্গা টিকা প্রয়োগে ছাড়পত্র দিয়েছে। তবে একটি বয়সসীমার শর্তও দিয়েছে তারা। এই কিউডেঙ্গা টিকা নতুন কিছু নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অ্যাডভাইজ হলো এই ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়পত্র দিয়েছে বলেই যে এটা আইডিয়াল ভ্যাকসিন, তা কিন্তু বলা যাবে না।’
আহমেদুল কবির বলেন, ‘ভ্যাকসিনের বিষয়ে আমরা জাতীয় টিকাসংক্রান্ত কারিগরি উপদেষ্টা কমিটিকে (নাইট্যাগ) বলেছি। আমরা ডেঙ্গুর ভ্যাকসিনের বিষয়ে পরামর্শ বা সুপারিশ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারব না। নাইট্যাগ বলেছে, তারা দ্রুত একটা মিটিং করে সিদ্ধান্ত জানাবে। তারা যদি পরামর্শ দেয়, তাহলে আমরা বসে একটা সিদ্ধান্ত নেব।’
ডা. আহমেদুল কবির বলেন, কিউডেঙ্গা ছাড়াও ডেনভেক্সিয়া নামক আরেকটা ডেঙ্গু ভ্যাকসিন আছে। তবে সেটা স্ক্রিনিং ছাড়া প্রয়োগ সম্ভব নয়। এই টিকা ডেঙ্গুর মাত্র একটি ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর। যাঁরা আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হননি, তাঁদের জন্য এই ভ্যাকসিন নিরাপদ নয়। এ ছাড়া ৯ বছরের কম বয়সী শিশুরা এই ভ্যাকসিনের উপযুক্তও নয়।
ডেঙ্গু কমে কবে স্বস্তি আসবে—আজ এ প্রশ্নের জবাবে আহমেদুল কবির বলেন, তাপমাত্রা না কমলে হয়তো ডেঙ্গু সংক্রমণটা কমবে না। ডেঙ্গুটা এখন তাপমাত্রার ওপর নির্ভরশীল। বৃষ্টি না থামলে কমার সম্ভাবনা দেখছি না। ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল না হলেও এডিস মশার বংশবৃদ্ধিটা ঠিকই প্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে।