সাতদলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকারপ্রধান ‘হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে’ হুঁশিয়ারি দিয়ে তাঁদের নেতাকর্মীকে আরও বেপরোয়া করে তুলতে চাচ্ছেন। দেশের মানুষকে ভয় দেখিয়ে বেআইনি বলে ক্র্যাকডাউন করতে চায় সরকার।
শুক্রবার রাজধানীতে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তাঁরা। বিএনপির দুই শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আপনি ভুল পথে যাচ্ছেন। দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবেন না। আপনি ঠিক করতে পারেন না, জনগণ কাকে ভোট দেবে আর কাকে দেবে না। আজকে রাজনৈতিক দল কী বক্তব্য দেবে, কোথায় মিটিং করবে এটা কি আপনি ঠিক করে দেবেন? আপনি কপবাজার থেকে শুরু করে যে কোনো মাঠে বক্তব্য দিতে পারবেন, আর অন্যান্য রাজনৈতিক দল কোনো মাঠে মিটিং করতে পারবে না! আপনি বিরোধী দলের নেতাদের চায়ের বদলে এখন জেলখানায় পাঠাচ্ছেন, গুলি করছেন। কায়দা করে আবার বাকশালের দিকে যাবেন না। বাকশাল কখনও আমাদের আদর্শ হতে পারে না।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, আজকে শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশ থেকে বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দেশের মানুষকে বাঁচাতে এই সরকারকে আর সুযোগ দেওয়া যায় না। এদের বিদায় করতে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দরকার হলে রক্ত দেব, ৮০ বছর বয়স হয়েছে তারপরও মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত আছি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিএনপির সমাবেশের স্থানকে ঘিরে ডিএমপির সঙ্গে যে ধরনের আলোচনা হয়েছে, তাতে মনে করেছিলাম একটা সমঝোতা হয়েছে। পুলিশ বলেছে, আটকরাও আইনগতভাবে জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু গভীর রাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে আটক করা হয়েছে। এর চেয়ে নিন্দনীয় ঘটনা আর কিছু হতে পারে না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার দেশের মানুষকে ভয় দেখিয়ে, সভা-সমাবেশ বেআইনি বলে ক্র্যাকডাউন করতে চায়। তারা সত্যি সত্যি দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু জনগণ তাদের অধিকার আদায়ে লড়াই করবেই। সামনে কর্মসূচি আসবে। আমরা যুগপৎভাবে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারের পতন নিশ্চিত করব।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার সংলাপের পথ বাদ দিয়ে নানা নাটক সাজিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিয়েছে। স্পষ্ট কথা, সংলাপের পথে না হাঁটলে আরেকটা গণজোয়ার সৃষ্টি করে এই সরকারকে বিদায় করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাউয়ুম ও গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানসহ আরও অনেকে।