ভারতে পেঁয়াজের রাজধানী হিসেবে খ্যাত মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের দাম আবার বেড়েছে। গত এক পক্ষে অর্থাৎ ১৫ দিনে মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত লাসালগাঁও এপিএমসিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ, গত ১ সপ্তাহে বেড়েছে ১৮ শতাংশ।
গতকাল বুধবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সবচেয়ে ভালো মানের পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৫০ রুপি। মহারাষ্ট্রের কিছু বাজারেও দাম ৫০ রুপিতে উঠেছে। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তখন নতুন খরিফ শস্য বাজারে উঠলে দাম কমতে শুরু করবে। তবে এই ফসল বাজারে আসতে প্রায় দুই মাস দেরি হচ্ছে।
আহমেদনগর জেলার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান নন্দকুমার শিরকে বলেছেন, আহমেদনগর বাজারে পেঁয়াজের দাম গত ১০ দিনে প্রতি কেজিতে প্রায় ১০ রুপি বেড়েছে। মহারাষ্ট্রের বেশির ভাগ পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলাগুলোতে পেঁয়াজের খুচরা মূল্য এখন প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৮ রুপি।
১০ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁও বাজারে পেঁয়াজের গড় পাইকারি দাম ছিল প্রতি কেজি ২৪ রুপি, গত মঙ্গলবার তা ৩৮ রুপিতে ওঠে।
আগস্ট মাসে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যেতে শুরু করলে সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। মূলত খরিফ শস্যের বীজ বপনে দেরি হওয়া এবং চাষের জমি কমে যাওয়ার কারণে পেঁয়াজের দাম তখন বাড়ছিল। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তখন বাজারে পেঁয়াজের দাম কমিয়ে আনতে নাফেদের (ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল কো–অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া) কেনা পেঁয়াজ বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি শুরু করে।
বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়া মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ। শিরকে আরও বলেন, গত ১৫ দিনে মজুত ভান্ডার থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ ৪০ শতাংশ কমেছে; আগে যেখানে প্রতিদিন ৪০০ ট্রাক পেঁয়াজ আসত, গত ১৫ দিনে তা ২৫০ ট্রাকে নেমে আসে। খরিফ মৌসুমের লাল পেঁয়াজ বাজারে আসতে দুই মাস দেরি হচ্ছে। তাই দাম আরও বাড়বে বলেই তিনি আশঙ্কা করেন।
গত দুই বছরে কৃষকের ক্ষতি হওয়ায় এবার কর্ণাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে খরিফ পেঁয়াজ বপন অনেকটাই কমে গেছে। সেই সঙ্গে এই দুটি রাজ্যে এবার বৃষ্টিপাতও কম হয়েছে।
এরপর রাজস্থানের আলোয়ার থেকে খরিফ পেঁয়াজ আসার কথা আছে। কিন্তু সেই রাজস্থানেও এবার ফলন ৪০ শতাংশ কম হবে বলেই আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।