এডিস মশা নিধনে কার্যকর ওষুধ সরবরাহসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক উপ-কমিটির ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে একথা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ডেঙ্গুকে সহজভাবে নিচ্ছে না, সিরিয়াসলি নিয়েছে। এটিকে সর্বাত্মকভাবে প্রতিরোধ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। দেশের সব অঞ্চলে ডেঙ্গু নিরাময় করতে ব্যাপক কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। আর এডিস মশা নিধনে কার্যকর ওষুধ সরবরাহসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। এ লক্ষ্যে সচেতনতা ও সতর্কতামূলক সভা-সমাবেশ এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা হবে। পাশাপাশি বন্যাদুর্গতদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চ্যালেঞ্জ নিয়েও মাঠে নেমেছেন তারা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধের পাশাপাশি বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা এবং বন্যার পরর্বতী সময়ে তাদের পুনর্বাসন করাও আওয়ামী লীগের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ। এই দুইটি চ্যালেঞ্জ নিয়েই মাঠে নেমেছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আওয়ামী লীগের ছয়টি ত্রাণ টিম প্রথম দিন থেকে সর্বাত্মকভাবে কাজ করছে।
‘সরকার ও আওয়ামী লীগ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়েনি এবং ছিটেফোঁটাও সাহায্য-সহযোগিতা করেনি’- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করে না। তারা সবসময় এদেশের মানুষের পাশে ছিলেন, আছেন এবং থাকবে। আওয়ামী লীগ যখন সরকারি দলে থাকে, তখনও মানুষের পাশে থাকে। বিরোধী দলে থাকতেও মানুষের পাশেই ছিল। এদেশের জনগণের পাশে বিশ্বস্তভাবে কেবল আওয়ামী লীগকেই পাওয়া যায়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কয়েকদিন ধরে বিএনপি কয়েকটি জায়গায় নামমাত্র ত্রাণ দেওয়ার নামে ফটোসেশন করেছে। এটা ছিল লোক দেখানো। এই লোক দেখানো ত্রাণ দিয়ে লাইভও করে যাচ্ছে তারা। বিএনপির পুঁজিই এখন ‘লাইভ সার্ভিস’।
‘আন্দোলন করেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে’- বিএনপি নেতাদের এমন হুঁশিয়ারি সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দেড় বছর কারাগারে। তাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য বিএনপি আন্দোলন করে যাবে বলে বেড়ায়। কিন্তু এই দেড় বছরে নেত্রীর জন্য মায়াকান্না ছাড়া এক মিনিটও আন্দোলন করতে পারেনি। এবারও পারবে না। তাদের আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেবে না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যেকোনো ইস্যুতে গুজব ছড়াতে তৎপর। তাদের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে টিম গঠন করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গুজব ছড়ানোই তাদের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া তাদের কোনো কাজ নেই, কথা বলার কোনো ইস্যুও নেই। আন্দোলন ও নিবার্চনে ব্যর্থ হয়ে গুজবের পথ বেছে নিয়েছে তারা। এই গুজবই তাদের সম্বল।
ওবায়দুল কাদের পরে গাইবান্ধার ফুলছড়ি, জামালপুরের ইসলামপুর, কুড়িগ্রামের রাজীবপুর এবং সিরাজগঞ্জ আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে স্ব স্ব এলাকার বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা প্রমুখ।