শিমুলিয়া-জাজিরা ঘাটে যানবাহন নেই, অলস পড়ে আছে ফেরি

0
111
শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ। দুটি ফেরি অলস পড়ে আছে। শরীয়তপুরের জাজিরার সাত্তার মাদবর–মঙ্গল মাঝির ঘাটে

পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি মেলার পর কোনো যানবাহনই মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা নৌপথে যাচ্ছে না। পাঁচ দিন ধরে ওই ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ফলে দুটি কে–টাইপের ফেরিতে এবং শিমুলিয়া, সাত্তার মাদবর–মঙ্গল মাঝির ঘাটে কর্মরত ৪৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অলস সময় কাটাচ্ছেন।

ঈদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মোটরসাইকেল আরোহীদের পদ্মা নদী পারাপারের জন্য ১৮, ১৯ এপ্রিল ওই নৌপথে দুটি ফেরি চলাচল করেছে। ২০ এপ্রিল সকাল থেকে পদ্মা সেতু মোটরসাইকেল আরোহীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এরপর আর ওই নৌপথে পদ্মা পার হওয়ার জন্য কোনো মোটরসাইকেল ও যানবাহন আসেনি। কিন্তু ঈদ–পরবর্তী তৃতীয় দিন পর্যন্ত নৌপথটিতে ফেরি চলাচলের ঘোষণা ছিল নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈদে ঘরমুখী মানুষের দুর্ভোগ কমাতে মোটরসাইকেল পারাপার করার জন্য শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথে ১৭ এপ্রিল কে–টাইপ ফেরি কুঞ্জলতা ও কলমিলতা আনা হয়। কুঞ্জলতা ফেরিটি আরিচা-কাজীরহাট নৌপথে, আর কলমিলতা ফেরি ভোলার ইলিশা-মজু চৌধুরীর ঘাট নৌপথে চলাচল করত।

১৯ এপ্রিল রাত হতে শিমুলিয়া ঘাটে ফেরি কুঞ্জলতা ও সাত্তার মাদবর–মঙ্গল মাঝির ঘাটে ফেরি কলমিলতা ভিড়িয়ে রাখা হয়েছে। ফেরি দুটির ৩০ কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দুটি ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ১৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ঈদের ছুটিও পাননি। অলস বসে থেকে সময় কাটছে তাঁদের।

কুঞ্জলতা ফেরির মাস্টার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদে যাতে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ মোটরসাইকেল নিয়ে নির্বিঘ্নে পদ্মা নদী পারাপার হতে পারে, সে জন্য আমাদের দুটি ফেরি শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথে আনা হয়েছিল। আমরা দুই দিন ফেরি চালিয়েছি। এখন পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলছে। তাই কেউ আর ফেরিতে পারাপারের জন্য ঘাটে আসছে না। ঈদে ছুটি না কাটিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করেছি। পাঁচ দিন ধরে অলস সময় কাটাচ্ছি। অপেক্ষায় আছি অন্য নৌপথে ফিরে যাওয়ার নির্দেশনার জন্য।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক জামাল হোসেন বলেন, প্রথমে সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল, ফেরিতে করে ঈদের আগে থেকে ঈদ–পরবর্তী তিন দিন পর্যন্ত মোটরসাইকেল পারাপার করা হবে। ঘোষণা অনুযায়ী এ নৌপথে ফেরি দুই দিন চলে। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০ এপ্রিল থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল করছে। সেতু দিয়ে নির্বিঘ্নে তা চলছে। সেখানে কোনো সমস্যা হয়নি।

জামাল হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা নৌপথটিতে প্রস্তুত ছিলাম। দুই ঘাট ও দুটি ফেরির ৪৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অলস সময় পার করছি। এখন ফেরি দুটি অন্য নৌপথে ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী আগামীকাল ঈদের পরবর্তী তিন দিন শেষ হবে। আগামীকাল রাতে হয়তো কোনো নির্দেশনা আসতে পারে।’

গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়। সব ধরনের বৈধ যানবাহন চলাচলের জন্য ২৬ জুন পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ওই দিন রাতে সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যু হয়। এরপর সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.