ভবিষ্যতে কৃষিখাতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জি২০ জোটের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। বাংলাদেশের মতো কৃষিপ্রধান দেশের কৃষি গবেষণায় বিনিয়োগের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে ভারতের হায়দরাবাদে জি২০ কৃষিমন্ত্রীদের তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি হুমকিস্বরূপ। সেজন্য, বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। তারপরও বৈশ্বিক সংকট, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কমসহ যে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য জি২০’র স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি কার্যকর পদক্ষেপ দরকার।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের কার্যকর কৃষিবান্ধব নীতির কল্যাণে বাংলাদেশে ফসল উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে ইতোমধ্যে ১.৭৫ শতাংশ চাষযোগ্য জমি কমেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেও ফসলের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধির কারণেই ১৭ কোটি মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য দেশের অভ্যন্তরেই উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার সকল স্তরের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে ড. আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে খাদ্যের কোনো সংকট নেই, বরং খাদ্যের প্রাপ্যতা বেড়েছে। অন্যদিকে বর্তমান সরকার নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী ও গরীব মানুষকে খাদ্যবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিনামূল্যে ও কমমূল্যে খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
‘খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির জন্য টেকসই কৃষি’ শিরোনামের এ সেশনে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এছাড়া ভারতের কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং টোমার, জি২০ভুক্ত ১৯টি দেশসহ মোট ২৯টি দেশের কৃষিমন্ত্রী বক্তব্য দেন। বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ ১০টি আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার শীর্ষ সংগঠন জি২০’র এবারের সম্মেলনের আয়োজক ভারত। নয়াদিল্লিতে আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে এ সম্মেলন। এতে বাংলাদেশ আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে অংশগ্রহণ করবে।