তেলের উৎপাদন নিয়ে সৌদি আরব ও রাশিয়ার অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত

0
141
জ্বালানি তেল, ছবি: সংগৃহীত

এশিয়ার বাজারে আজ বুধবার তেলের দাম আবারও বেড়েছে। সৌদি আরব ও রাশিয়া যে নিজে থেকে তেল উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছিল, সেটা তারা চলতি বছর পর্যন্ত চালিয়ে যাবে—এমন খবর আসার পর তেলের দাম বেড়েছে।

আগের দিনও তেলের দাম এক শতাংশ বেড়েছিল। এরপর আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১৪ সেন্ট বেড়ে প্রতি ব্যারেল ৯০ ডলার ছাড়িয়ে যায়, দাম এখন দাঁড়িয়েছে ৯০ দশমিক ১৮ ডলার। এ ছাড়া ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১২ সেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ দশমিক ৮১ ডলার প্রতি ব্যারেল। খবর রয়টার্সের

আগে বিনিয়োগকারীদের ধারণা ছিল, সৌদি আরব ও রাশিয়া অক্টোবর পর্যন্ত উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্তে অটল থাকবে, কিন্তু তারা যে ডিসেম্বর পর্যন্ত তা টেনে নিয়ে যাবে, সেটি অপ্রত্যাশিত।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রাইস্টাড এনার্জির জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট হোর্হে লিওন রয়টার্সকে বলেন, ‘এই তেজিভাবের কারণে তেলের বাজারে সরবরাহ কমছে, পরিণামে একটি বিষয়ই ঘটতে পারে, আর সেটা হলো বিশ্বব্যাপী তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া।’

হোর্হে লিওন আরও বলেন, সৌদি আরব ও রাশিয়ার তেল উৎপাদন হ্রাসের কী প্রভাব পশ্চিমের দেশগুলোতে পড়বে, তা বলা কঠিন হলেও একটি বিষয় হয়তো ঘটতে পারে। সেটা হলো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ আবারও নীতি সুদহার বৃদ্ধি করবে।

রাইস্টাডের হিসাব মতে, এই দুই দেশের তেল উৎপাদন কমানোর কারণে পরের প্রান্তিক থেকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাবে। সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকবে দৈনিক ২৭ লাখ ব্যারেল।

সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটি যে নিজে থেকে দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছিল, তা চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চালিয়ে যেতে চায়।

সেই সঙ্গে রাশিয়া যে নিজে থেকে দৈনিক তিন লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল, তা–ও ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চালিয়ে নিতে চায় তারা।

এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো তেল উৎপাদন কমানোর যে ঘোষণা দিয়েছিল, রাশিয়া ও সৌদি আরব তার ওপর নিজেরা আরও তেল উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণা দেয়। ওপেকের সিদ্ধান্তের মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত।

তবে সৌদি আরব ও রাশিয়া প্রতি মাসেই বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে তেল উৎপাদন কমানো বা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেল পরিশোধনাগার রক্ষণাবেক্ষণের সময়। এ সময় তাদের অপরিশোধিত তেলের চাহিদা কমে যায়। সে কারণে তেলের দাম খুব বেশি না–ও বাড়তে পারে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়, ২০২২ সালে তা ১৩৩ ডলারে ওঠে। কিন্তু এরপর যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির গতি কমে যাওয়ায় তেলের দাম ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। একসময় তা যুদ্ধের আগের পর্যায়ে নেমে আসে।

তবে সৌদি আরব তেলের দাম বাড়াতে উৎপাদন কমাতে শুরু করে। তারা চায়, তেলের দাম প্রতি ব্যারেল অন্তত ৮০ ডলারের ওপরে থাক। তাদের উৎপাদন হ্রাসের কারণে তেলের দাম অবশ্য এখন ৯০ ডলারে উঠে গেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.