ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) আওতাধীন তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ২৪ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়।
গতকাল রাত নয়টার দিকে বিজিএফসিএলের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মাহমুদুন নবী ও তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ২৪ নম্বর কূপের সমন্বয়ক মীর মো. আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাঁরা বলেন, গ্যাসের চাপ পরীক্ষার (টেস্টিং) কাজ শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের জন্য কারিগরি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষে গতকাল বিকেল থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা শুরু হয়। এ কূপ থেকে দৈনিক আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিজিএফসিএল সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ২৪ নম্বর কূপটি ২০১৬ সালে খনন শুরু হয়। সিনোপ্যাক নামে চীনের একটি কোম্পানি খননকাজ শুরু করে। খননকাজ শেষে ওই কূপের সি-৬ অঞ্চল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু করে বিজিএফসিএল। কিন্তু ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি কারিগরি ত্রুটির কারণে পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় আড়াই বছর কূপটি বন্ধ থাকে। এরপর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) ওই কূপে অনুসন্ধানকাজ চালিয়ে গ্যাসের মজুত পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ মে ওই কূপে নতুন করে যন্ত্রপাতি বসানোর কাজ শুরু হয়।
কূপে গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিতের পর গ্যাসের চাপ পরীক্ষা শেষে কূপ থেকে দ্রুত জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়। পরে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ২৪ নম্বর কূপের সি-৫ অঞ্চল থেকে গ্যাস উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া সাপেক্ষে গতকাল বিকেল থেকে আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা শুরু হয়। তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের এই কূপে এক ট্রিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুত আছে।
বিজিএফসিএলের আওতাধীন বর্তমানে তিতাস, কুমিল্লার বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, নরসিংদী, মেঘনা, কামতা গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিজিএফসিএলের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মাহমুদুন নবী বলেন, বর্তমানে তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের ২৪ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। এটি অনেক বড় একটি অর্জন। সবার জন্য স্বস্তি ও আনন্দের খবর।