অ্যান্টিগায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে তাসকিন আহমেদের একটি ঘটনা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের খবর, সেদিন ঘুম থেকে উঠতে দেরি করায় দলের সঙ্গে মাঠে যেতে পারেননি তাসকিন। আর এ জন্যই নাকি ভারত ম্যাচের একাদশে তাঁকে রাখা হয়নি। তবে সেদিন ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সংগীতের সময় মাঠে দলের সঙ্গে দেখা গেছে তাসকিনকে।
আজ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিষয়টি নিয়ে তাসকিন তাঁর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাসকিন সেখানে লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি সম্প্রতি অনলাইনে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেছি যে সম্প্রতি শেষ হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপের একটি ঘটনা নিয়ে অনেক হইচই করা হচ্ছে। প্রথমত, আমি সবাইকে জানাতে চাই যে বেশির ভাগ সংবাদ ও তথ্য, যা ছড়ানো হচ্ছে, তা কেবল গুজব এবং আমি আশা করি ভক্তরা এটি সেইভাবে দেখবেন। দ্বিতীয়ত, আমি ঘটনাটি সেদিন আসলে কী ঘটেছিল, তা পরিষ্কার করতে চাই।’
তাসকিন এরপর লিখেছেন, ‘আমি স্বীকার করি যে আমি স্বাভাবিকের চেয়ে পরে (ঘুম থেকে) উঠেছি এবং এর জন্য আমি ইতিমধ্যে পুরো দল ও ম্যানেজমেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমি সকাল ৮টা ৩৭–এ উঠেছিলাম এবং ৮টা ৪৩–এ লবিতে গিয়েছিলাম এবং আমার রাইড প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি সকাল ৯টায় হোটেল ছেড়েছি। আমি সকাল ৯টা ৪০–এ স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছি, ম্যাচ টসের ২০ মিনিট আগে সকাল ১০টায়। আমরা সকাল ১০টা ১৫–তে জাতীয় সংগীত গেয়েছিলাম এবং ম্যাচটি সকাল ১০টা ৩০–এ শুরু হয়েছিল।’
সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে তাসকিন লিখেছেন, ‘এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে এই তথাকথিত ক্রীড়া সাংবাদিকেরা গুজবের ভিত্তিতে খবর প্রচার বা মুদ্রণ করছে এবং যাচাই না করে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই পেসার স্ট্যাটাসে নিজের দেশপ্রেমের কথাও লিখেছেন। পাশাপাশি এটাও জানিয়েছেন, ভারতের বিপক্ষে তাঁর না খেলাটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিল। সময়মতো টিম বাসে না ওঠার সঙ্গে তাঁর ওই ম্যাচে না খেলার সম্পর্ক নেই, ‘যাঁরা আমাকে চেনেন, তাঁরা জানেন, আমি আমাদের দেশকে কতটা ভালোবাসি এবং বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কতটা নিবেদিত, উৎসাহী ও গর্বিত। আমি জানি, আমি সময়মতো টিমের বাসে না ওঠার একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল করেছি, কিন্তু আমি টসের আগেই স্টেডিয়ামে ছিলাম। আমার চূড়ান্ত দলে নির্বাচিত না হওয়াটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিল, যা সঠিক টিম কম্বিনেশন পাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এটি আমার টিম বাসে না ওঠার ব্যর্থতার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না।’
স্ট্যাটাসের শেষ অংশে তাসকিন লিখেছেন, ‘আমি আশা করি, মিডিয়া ও ক্রীড়া সাংবাদিকেরা মিথ্যা গল্প লেখার আগে আরও সতর্কতা অবলম্বন করবেন এবং একটি বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করবেন না। এটি কেবল আমাদের খেলোয়াড়দের ক্ষতি করে না, বরং আমাদের দেশের সামগ্রিক চিত্রকে ক্ষুণ্ন করে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সবাই সৎ ও পেশাদার সাংবাদিকতা আশা করি, যাতে জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে পারি।’ শেষ কথায় তাসকিন এটাও বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমি আইনিভাবে এ ধরনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব, যাতে কেউ ক্রীড়াবিদ বা মানুষ হিসেবে আমার সুনাম বা অখণ্ডতা ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা না করেন। আমার ভক্তদের ধন্যবাদ তাঁদের অব্যাহত সমর্থনের জন্য।’