গাড়িচাপা দেওয়ার পর রুবিনা ইসলাম নামে এক নারীকে প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চাকরিচ্যুত শিক্ষক মোহাম্মদ আজহার জাফর শাহ (৫৫) মারা গেছেন।
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাচ্চু মিয়া বলেন, তাকে (জাফর শাহ) মোটামুটি সুস্থ অবস্থায় কয়েক সপ্তাহ আগে জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আজ আবার তাকে ভর্তি করা হয়। বিকেল চারটার দিকে তিনি মারা যান।
তিনি জানান, ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাবির সাবেক ওই শিক্ষাক শুক্রবার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপসাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। বিকেল ৪টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২ ডিসেম্বর ঢাবির চারুকলা অনুষদের উল্টো পাশের টিএসসি অভিমুখী সড়কে এক নারী সাবেক ওই শিক্ষকের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে আটকে যান। তবে চালক গাড়িটি না থামিয়ে বেপরোয়া গতিতে চালাতে থাকেন। পথচারীরা তাকে থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
এদিকে গাড়ির নিচে আটকে থাকা নারীকে নিয়েই টিএসসি থেকে বেপরোয়া গতিতে নীলক্ষেতের দিকে যান গাড়িচালক। অন্যদিকে পথচারীরা তাকে পেছন থেকে তাড়া করেন। শেষ পর্যন্ত নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ থেকে পলাশী অভিমুখী সড়কের মুখে চালককে আটকে ওই নারীকে জীবিত উদ্ধার করেন পথচারীরা।
এসময় চালক জাফরকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পরে দুজনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসক রুবিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রুবিনার ভাই জাকির হোসেন মিলন বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
আজহার জাফর শাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু নৈতিক স্খলনজনিত কারণে ২০১৮ সালে তাকে পদাবনতিসহ চাকরিচ্যুত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।