ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন

0
121
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সবাইকে নিয়ে কেক কাটেন, ছবি: সংগৃহীত

নানা আয়োজনে উদ্‌যাপিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়’। প্রতিষ্ঠার ১০৩তম বছরে এসে প্রতিকূল ও বৈরী পরিবেশে কাজ করার মতো দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ ও স্মার্ট গ্র্যাজুয়েট তৈরির ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

আজ ১ জুলাই ১০৩ বছরে পা দিয়েছে দেশের প্রাচীনতম এই বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ৮৪৭ শিক্ষার্থী, ৩টি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়। আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল ও হোস্টেলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অ্যালামনাইদের নিয়ে স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের হয়৷ পরে সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পায়রা চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন, পায়রা ওড়ানো, বেলুন উড্ডয়ন, থিম সং পরিবেশন এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচির সূচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভিন্ন বিভাগের প্রধানসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন৷

সকাল সাড়ে ১০টায় টিএসসি মিলনায়তনে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। প্রতিকূল ও বৈরী পরিবেশে কাজ করার মতো দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ ও স্মার্ট গ্র্যাজুয়েট তৈরির ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তিনি। উপাচার্য বলেন, সবাইকে প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ এবং জ্ঞানভিত্তিক, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। স্মার্ট গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে পঠন-পাঠন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অ্যালামনাইদের নিয়ে স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়
সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অ্যালামনাইদের নিয়ে স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়, ছবি: সংগৃহীত

উপাচার্য আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে ‘ডিইউবিডি-ভ্যাক’ নামে একটি বায়োসিমিলার কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন ভ্যাকসিন উৎপাদন এবং এ–সংক্রান্ত উন্নত গবেষণার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অত্যাধুনিক ভ্যাকসিন গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সরকারের সহায়তাও কামনা করেন।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক পর্যায় থেকেই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশলশিক্ষাকে আরও মজবুত ও প্রসারিত করতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরি করতে পারলে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক রূপান্তর দরকার। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ ও এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সুভাষ সিংহ রায় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বক্তব্য দেন। আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা৷

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.