অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকার ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রায় ৭০ ভাগ সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারবে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
ড. আসিফ নজরুল জানান, তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার মতো আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলোর প্রায় অর্ধেক ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই অন্তত ৭০ শতাংশ সংস্কার সম্পন্ন করে যাওয়া সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, যে সকল সংস্কার প্রস্তাব সংবিধান সংশ্লিষ্ট, সেগুলোর জন্য বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন, কারণ অধ্যাদেশ বা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন করা যায় না।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, কিছু প্রস্তাব সংবিধান সংশ্লিষ্ট হিসেবে উপস্থাপিত হলেও বাস্তবে তা তেমন নয়। উদাহরণস্বরূপ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রধান কে হবেন, তা কেবল কার্যপ্রণালীর বিধি পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।
আইন উপদেষ্টা জানান, বাকি পাঁচটি কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নযোগ্য কিনা, তা নিরূপণে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে কাজ চলছে। কিছু সুপারিশের বাস্তবায়ন ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
ড. আসিফ নজরুল এও বলেন যে, সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে অবিচল রয়েছে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর কোনো আইনি সংশোধন আনা যাবে না, কারণ তা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই প্রয়োজনীয় সব আইনি সংস্কার ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। তিনি সবার নিয়ত ভালো থাকলে সমাধান কঠিন হবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’ বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করতে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। জাতীয় ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় জড়িত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার সভাটি পরিচালনা করেন।
কমিশনে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া। বিএনপি, এনসিপি, জামায়াত ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।