গত বৃহস্পতিবার স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি জানিয়েছিলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টি এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসনপ্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করবে না। তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা তখনই এ প্রক্রিয়া শুরু করব, যখন এটি শুরু করা দরকার। তার এক দিন আগেও নয়, পরেও নয়।’
গতকাল শুক্রবার জানা গেল, ডেমোক্রেটিক–নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের বিচার বিভাগীয় কমিটি বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট ম্যুলারের তদন্তের বিভিন্ন অপ্রকাশিত তথ্য চেয়ে ফেডারেল আদালতে মামলা করেছে। গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজনে জুরিবোর্ডে আলোচিত হয়েছে—এমন সব মামলার তথ্য এত দিন অবমুক্ত করা হয়নি। বিচার বিভাগীয় কমিটি তাদের আবেদনে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনপ্রক্রিয়া শুরুর জন্য এ তথ্য লাগবে। সে তথ্য চাওয়ার অধিকার কংগ্রেসের আছে।
আদালতের কাছে এই আবেদন করার অর্থ হলো কংগ্রেস প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসনপ্রক্রিয়া শুরুর কথা ভাবছে। বিচার বিভাগীয় কমিটির প্রধান কংগ্রেসম্যান জেরি ন্যাডলার বলেছেন, কাগজে–কলমে অভিশংসনপ্রক্রিয়া শুরু না হলেও তাদের সর্বশেষ পদক্ষেপ সে লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আর্থিক অনিয়ম নিয়ে তাঁরা যে তদন্ত শুরু করেছেন, তা অব্যাহত থাকবে। এ কাজে তাঁদের করণীয় সবকিছু করতেই তাঁরা প্রস্তুত, এমনকি অভিশংসনের জন্য সংসদীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও তাঁরা দ্বিধা করবেন না।
দুই দিন আগে কংগ্রেসের বিচার ও গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটির সামনে সাবেক বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট ম্যুলারের উন্মুক্ত শুনানির পরে ভাবা হয়েছিল, অভিশংসনের পথটি ডেমোক্র্যাটদের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু ডেমোক্রেটিক পার্টির একাংশ মনে করে, ম্যুলার তাঁর সাক্ষ্যে এমন অনেক কথাই বলেছেন, যার ভিত্তিতে অভিশংসন শুরু করা যায়। বিশেষত, দলের বামপন্থী অংশ মনে করে, এ প্রক্রিয়া এখন শুরু না করলে আর কখনোই করা যাবে না। তাঁরা খোলামেলাভাবেই স্পিকার পেলোসিকে অহেতুক কালক্ষেপণের জন্য অভিযুক্ত করেছেন। পেলোসি অবশ্য সে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, মোটেই না, তিনি কেবল অধিক বাস্তবসম্মত পথটি অনুসরণের পক্ষপাতী।
ম্যুলারের সাক্ষ্যের পর ট্রাম্প তাঁর বিরুদ্ধে সব তদন্ত শেষ বলে ঘোষণা করেছিলেন। কংগ্রেসের বিচার বিভাগীয় কমিটি ম্যুলার তদন্তের গোপনীয় তথ্য চেয়ে আদালতের কাছে লিখিত আবেদন করায় তিনি স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, ডেমোক্র্যাটদের একটাই লক্ষ্য—তাঁর কাজে যেভাবে সম্ভব বাধা সৃষ্টি করা। তদন্তের নামে তারা এখন যা করছে, তা ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।