সংবিধানের মাধ্যমে দেওয়া বিশেষ সুবিধা প্রত্যাহারের পর জম্মু-কাশ্মীরে যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল তা কিছুটা তুলে নেওয়া হয়েছে; কিছু এলাকায় ফিরেছে টু-জি ইন্টারনেট সেবাও।
শনিবার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, কাশ্মীর উপত্যকায় আরোপ করা বিধিনিষেধ কিছুটা তুলে নেওয়া হয়েছে। ৫০ হাজারের বেশি টেলিফোন সংযোগ আবার চালু হয়েছে। কিছু এলাকায় টু-জি ইন্টারনেট সেবাও চালু হয়েছে।
কাশ্মীরের পুলিশ জানিয়েছে, উপত্যকায় জনসমাগমের ব্যাপারে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল; সেসব ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে কঠোর নিরাপত্তার ব্যাপারটি থাকছে আগের মতোই।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, নিরাপত্তাকর্মীরা আগের মতোই অবস্থানে থাকবেন। সড়কে যে বেরিকেড দেওয়া হয়েছে সেসব জায়গায় পথচারীদের তল্লাশি করে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে।
জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান সচিব রোহিত কনসাল বলেন, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হচ্ছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত টেলিফোন সংযোগ পুনস্থাপনের পাশাপাশি কিছু বেশ কিছু এলাকায় মোবাইল ফোনে টু-জি ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে। থ্রি-জি ইন্টারনেট সেবা চালুর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে শিগগগিরই। এর মাধ্যমে পরিস্থিতি আরও কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ভারতের রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের ৭০ বছরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে নরেন্দ্র মোদির সরকার। সংবিধানের এই ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুই ভাগ করা হয়।
৩৭০ ধারার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই স্বায়ত্তশাসিত ছিল জম্মু-কাশ্মীর। নিজস্ব সংবিধান, আলাদা পতাকা ও স্বতন্ত্র আইন বানানোর অধিকার ছিল ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের। তবে ৩৭০ ধারা বাতিলের ফলে এখন থেকে জম্মু-কাশ্মীরের পরিচিতি হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে।
ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পার্লামেন্টে তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরে এখন জাতিগত নিধন চালানো হবে। ৩৭০ ধারা বাতিল করায় জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।