অবাক হওয়ার মতো বিষয়ই বটে! টানা ১১ ম্যাচ হেরে রেকর্ড করে সবার নিচে থেকে বিপিএল শেষ করা দুর্দান্ত ঢাকার খেলোয়াড়রা কিন্তু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের তালিকায় সবার ওপরে। ২২ উইকেট নিয়ে বোলিংয়ে শীর্ষে ঢাকার পেসার শরিফুল ইসলাম। ব্যাটিংয়েও ৩৫২ রান নিয়ে শীর্ষে ঢাকার এলেক্স রস। এই বৈপরিত্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন, বিচ্ছিন্নভাবে তাদের কেউ কেউ ভালো খেলেছেন। কিন্তু তারা দল হিসেবে পারফর্ম করতে পারেননি। তাই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের তালিকায় শীর্ষে থাকলেও দল হিসেবে ভরাডুবি হয়েছে তাদের।
রান সংগ্রহে তিন নম্বরে থাকা নাঈম শেখও ঢাকার খেলোয়াড়। ঢাকার অস্ট্রেলিয়ান রিক্রুট এলেক্স রস ১১ ম্যাচে ৩৯.১১ গড়ে ৩৫২ রান করেছেন। তাঁর স্ট্রাইক রেটও মন্দ নয়, ১৩৪.৮৬। নাঈম ১২ ম্যাচে ৩১০ রান করেছেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১১৯.৬৯। তবে এ দু’জন ছাড়া ঢাকার বাকি ব্যাটারদের আর কেউই জ্বলে উঠতে পারেননি। বোলিংয়েও একই অবস্থা। উইকেট সংগ্রহে চার নম্বরে থাকা তাসকিন আহমেদও ঢাকার। বোলিংয়েও শরিফুল ও তাসকিন ছাড়া আর কেউ ধারাবাহিক ছিলেন না।
ব্যর্থতার কারণ হিসেবে এ বিষয়গুলোই বলেছেন ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন, ‘ব্যাটিংয়ে সেরা পাঁচে আমাদের রস ও নাঈম আছে। একইভাবে বোলিংয়ে শরিফুল ও তাসকিন রয়েছে। তবে বাকিদের কাছ থেকে আমরা কোনো পারফরম্যান্সই পাইনি।’
তিনি উদাহরণ দিয়েও দেখিয়েছেন, ‘বেশ কয়েকটি ম্যাচে আমরা দারুণ শুরুর পরও পারিনি। খুলনার সঙ্গে ৯ ওভারে ১ উইকেটে ৭৫ রান করার পরও আমরা মোট রান করেছি ১৩০। সিলেটের সঙ্গে ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৮২ রান করেছিলাম, সে ম্যাচে আমাদের মোট রান হয় ১২৪! কুমিল্লার বিপক্ষে ১৮০ রান করেও জিততে পারলাম না। আমরা অনেক ম্যাচে ভালো খেলেও জিততে পারিনি, আমাদের মিডল অর্ডার পুরোপুরি ব্যর্থ ছিল। বেশির ভাগ ম্যাচে আমাদের ডুবিয়েছে ব্যাটিং, আর কিছু ম্যাচে বোলিং। আসলে আমরা দল হিসেবে পারফর্ম করতে পারিনি।’
মানসিক দিক থেকেই ঢাকা পিছিয়ে ছিল বলে মনে করছেন খালেদ মাহমুদ, ‘আসলে হারতে হারতে যেটা হয়েছে, আমাদের মনোবল একদম ধ্বংস হয়ে গেছিল। এই অবস্থা থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে টেনে তোলার মতো কেউ ছিল না। আমরা জিততে পারি, আমরা জিতব.. এই কথাগুলো বলার মতো কেউ ছিল না। খেলোয়াড়দের মধ্যে জেদি মনোভাবের অভাব ছিল বলে আমার মনে হয়েছে।’
দলের কম্বিনেশন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের টিম খারাপ ছিল না। দেশি-বিদেশি সংগ্রহ ভালোই ছিল। বেশ কিছু বড় বড় নাম ছিল। কিন্তু এলেক্স রস ছাড়া আর কেউ পারফর্ম করতে পারেনি। রসকে কিছু ম্যাচে একা ব্যাটিং করতে হয়েছে, পার্টনার পায়নি। তাদের কাছে আমার অনেক বেশি প্রত্যাশা ছিল। আমাদের দেশি-বিদেশি কেউই ভালো খেলতে পারেনি। মোসাদ্দেক, সাইফ, আরাফাত সানিদের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রমাণিত ক্রিকেটাররা ভালো খেলতে পারেনি।’
দেশি ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা তাদের বেশি ভুগিয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি।