পিস্তল বের করে গুলি করলেন যুবলীগ নেতা, রিকশাচালক নিহত, কাউন্সিলরসহ আটক ২ জন

0
111
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আনোয়ার উদ্দিন। ছবি-সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবলীগ নেতা আনোয়ার উদ্দিনের ছোড়া গুলিতে মামুন হোসেন (২৪) নামে এক রিকশাচালক নিহত হওয়ার ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে শহরের শৈলপাড়া ও পশ্চিমটেংরি কাচারি পাড়া এলাকায়।

এ ঘটনায় ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন এবং অভিযুক্ত আনোয়ার উদ্দিনের ছেলে হৃদয় হোসেনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আটক করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

বুধবার দিবাগত গভীর রাতে শহরের শৈলপাড়ায় তাদের বাড়ি থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহত মামুনের খালাত ভাই পারভেজ হোসেন জানান, বুধবার রাত ৮টার দিকে ঈশ্বরদী ইপিজেড থেকে দ্রুতগামী ভটভটি ও লেগুনা গাড়ি শহরের পশ্চিমটেংরি কড়ইতলায় থামিয়ে তাদের বেপরোয়া গতিতে চলাচলে নিষেধ করে স্থানীয় দোকানিরা। এ নিয়ে দোকানি ও গাড়ি চালকদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে যুবলীগ নেতা আনোয়ার উদ্দিন ১০-১২ জন সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে প্রতিবাদকারীদের ওপর চড়াও হয়। এসময় রিকশাচালক মামুন ‘কি হয়েছে’ বলে প্রশ্ন করলে তাকে সবার সামনে পিস্তল দিয়ে গুলি করে আনোয়ার উদ্দিন।

নিহত রিকশাচালক মামুনের মায়ের আহাজারি।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আরিফ হোসেন বলেন, তাদের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে মামুন হোসেন ও রকি হোসেনকে সবার সামনে গুলি করে।

ওই গুলিতে মামুন ও রকি গুলিবিদ্ধ এবং ছুরিকাঘাতে আহত সুমনকে ঈশ্বরদী হাসপাতালে নেওয়া হলে মামুনকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাঘাতে আহত অপর দু’জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত মামুন শহরের পিয়ারাখালি এলাকার মনির হোসেনের ছেলে।

আটক পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা স্বপ্না বলেন, মধ্যরাতে পুলিশের পোশাক পরিহিত ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একদল সদস্যরা তার বাড়িতে এসে স্বামী পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন ও আনোয়ারের ছেলে হৃদয় হোসেনকে আটক করে নিয়ে যায়।

(বাঁ থেকে) অভিযুক্ত আনোয়ার উদ্দিন ও আটক পৌর কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন। ছবি-সংগৃহীত

অভিযুক্ত আনোয়ার উদ্দিনের স্ত্রী বিচিত্রা পারভিন বলেন, আমার স্বামী আনোয়ার যুবলীগের রাজনীতি করলেও তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন, তাকে ফাঁসানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে গুলি করার কথা বলা হচ্ছে।

ঈশ্বরদী পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম লিটন বলেন, আনোয়ার উদ্দিন যুবলীগের কোন কমিটিতে নেই, তিনি যুবলীগের সদস্য না। ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন তার ভাই, সেই প্রভাবেই তিনি নিজেকে যুবলীগের নেতা বলে জাহির করে থাকেন।

ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার পৌর কাউন্সিলরকে আটকের কথা অস্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। পুলিশের অন্যান্য ইউনিটও ঘটনা তদন্ত করছে, কাউন্সিলরকে পুলিশের অন্য কোন ইউনিট আটক করতে পারে। মরদেহ ময়না তদন্তের পর তার স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.