জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো বন্ধে এবার বড় পরিসরে বিক্ষোভে নামতে যাচ্ছেন জলবায়ু আন্দোলনকারীরা। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ৫০টির বেশি দেশে প্রতিবাদে নামবেন তারা।
পৃথিবীতে ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। রেকর্ডভাঙা বন্যা, দাবানল এবং খরা দেখছে বিশ্ব। প্রাকৃতিক এমন বিপর্যয়ের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় শুক্রবার থেকে রোববার ৫৪টি দেশে সমাবেশের পরিকল্পনা নিয়েছেন জলবায়ু আন্দোলনকারীরা। খবর রয়টার্সের।
বিক্ষোভের আয়োজকরা আশা করছেন, সমাবেশে বিশ্বব্যাপী ১০ লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেবে। ধারণা করা হচ্ছে, কভিড মহামারির পর এটাই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক জলবায়ু প্রতিবাদ। এর আগে সুইডিশ কর্মী গ্রেটা টুনবার্গের নেতৃত্বে ‘স্কুল ধর্মঘট’ আন্দোলনে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ যোগ দিয়েছিল।
ফিলিপাইনের ম্যানিলায় ফ্রাইডেস ফর ফিউচারের জলবায়ু কর্মী মিটজি জোনেলে টান বলেন, বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এই সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানির সময় শেষ। আমাদের এখন রূপান্তর প্রয়োজন। পরিবেশ ধ্বংসের কারণ জীবাশ্ম জ্বালানিগুলোকে ধীরে ধীরে বাদ দিতে হবে। আয়োজকরা বলছেন, বিভিন্ন দেশের সরকারকে অবিলম্বে তেল ও গ্যাসের জন্য ভর্তুকি বন্ধ করার পাশাপাশি উৎপাদন সম্প্রসারণের যে কোনো পরিকল্পনা বাতিল করার আহ্বান জানাবে তারা।
এদিকে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে আগামী ২৭ বছরের প্রত্যেক বছর বিনিয়োগ করতে হবে ২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা ও কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেঞ্জি বৃহস্পতিবার তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এই তথ্য।
যদি বিশ্বের ধনী দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ না করে, তাহলে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা অন্তত ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ। গড় তাপমাত্রা এই পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে রীতিমতো বিশৃঙ্খলা শুরু হবে বৈশ্বিক জলবায়ুতে। বিভিন্ন দেশে ঘন ঘন দেখা দেবে টানা দীর্ঘ তাপপ্রবাহ, খরা, ঘূর্ণিঝড়, অতিবর্ষণ ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ ছাড়া বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বেড়ে গেলে দুই মেরু অঞ্চলের তাপমাত্রাও বাড়বে।