গত এক সপ্তাহ ধরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকরামুল হক সাজীদ। গত ৪ আগস্ট মিরপুরে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। একপর্যায়ে মিরপুর ২ নম্বর এলাকায় হঠাৎ পুলিশের একটি গুলি তার মাথার পেছনে লাগে। মাথা ভেদ করে বুলেটটি তার চোখের পেছনে আটকে যায়।
একমাত্র ছেলের এমন সংকটাপন্ন অবস্থায় পাগলপ্রায় সাজিদের মা। ছেলের সুস্থতা কামনা করে সবার কাছে দোয়া চাচ্ছেন। সাজিদের বোন জানান, অপারেশন করার পরও সাজিদের অবস্থার অপরিবর্তিত রয়েছে। অবস্থার কোনও উন্নতি হচ্ছে না।
আন্দোলনে থাকা অবস্থায় মায়ের সাথে সাজিদের কথা হয়েছিল। তখন সাজিদ বলেছিল, চিন্তা করো না মা, আমার কিছু হবে না। হাসপাতালের দেয়ালগুলো যেন সাজীদের মায়ের কান্নার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আন্দোলন থেকে শুরু করে হাসপাতাল এই পুরোটা সময় সাজিদের বন্ধুরা তার সাথে ছিল। একসাথে কাধে কাধ মিলিয়ে প্রতিবাদ করেছেন তারা। সাজিদের কথার স্মৃতিচারণ করেছেন তার কয়েকজন বন্ধু। বন্ধুদের সাজীদ বলেছিল, এখন আন্দোলনের সময় তাই ঘরে থাকা যাবে না।
তারা জানান, সাজীদের পাশাপাশিই ছিলেন তারা। হঠাৎ একটি বুলেট পিছন থেকে এসে সাজিদের মাথায় আঘাত করে। মাটিতে পড়ে যায় সাজিদ। এরপর তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।
এদিকে, সাজিদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সিএমএইচের কমান্ডেন্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাশিউল মুনীর। তিনি জানান, সাজিদের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। সে তার নিজের আত্মশক্তির বিশ্বাসে বেচে আছে একথা বলা যায়। তার দেহ বেচে থাকার মরণপন চেষ্টা করছে।
সিএমএইচ কমান্ডেন্ট আরও জানান, এখন পর্যন্ত আন্দোলনে আহত ৭৪ জন রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে ৩৪ জন বেসামরিক, বাকিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। এদের মধ্যে ১৭ জনের জটিল অপারেশন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সাজীদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের এমবিএ’র শিক্ষার্থী।
আখলাকুস সাফা