জিম্মি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানাল হামাস

0
15

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করা হয়েছে। বছরব্যাপী হত্যার মিশন বুধবার সফলভাবে সম্পন্ন করেছে ইসরায়েল।

সিনওয়ার হত্যার পর হামাস জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে তাদের হাতে আটক থাকা আর কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে না। ইসরায়েলি হামলায় হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ার পর শোক জানানোর পাশাপাশি সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইতিহাসে নজিরবিহীন হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলার মাস্টারমাইন্ড, মূল হোতা বলা হয় ইয়াহিয়া সিনাওয়ারকে। তাকে হত্যার পর চলমান যুদ্ধে মোড় বদলের আশা জেগেছিল। বিশেষত জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের স্বজনদের ফিরে পাওয়া এবং গাজাবাসীর আরও মানবিক সহায়তা পাওয়ার আশা তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু কাতারভিত্তিক হামাসের কর্মকর্তা খলিল আল-হায়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘গাজায় আমাদের মানুষদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আর কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে না। এটাই হামাসের সর্বশেষ অবস্থান।’

হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইসরায়েলের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় ছিলেন। বৃহস্পতিবার সিনওয়ারের নিহত হওয়ার খবর জানায় ইসরায়েল। পরে হামাসের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানানো হয়। যুদ্ধে অনেকটা কোণঠাসা হওয়া হামাসের জন্য এই ঘটনাকে বড় একটি ধাক্কা বলা হচ্ছে।

সিনওয়ারকে হত্যার বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সিনওয়ারের মৃত্যু হামাসের অশুভ শাসনের পতনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ যুগান্তকারী ঘটনা। তিনি বলেন, যদিও এটি গাজা যুদ্ধের শেষ নয়, এটি শেষের শুরু।

এদিকে সিনওয়ারের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সিনিয়র সদস্য বাসেম নাইম এএফপিকে বলেছেন, ‘হামাস একটি মুক্তি আন্দোলন, যার নেতৃত্বে মানুষ স্বাধীনতা এবং মর্যাদা খুঁজছে। নেতাদের হত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটিকে নির্মূল করা যাবে না। এক বিবৃতিতে তিনি অতীতে নিহত হামাস নেতাদের স্মরণ করে বলেছেন, তাদের মৃত্যু গোষ্ঠীর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, এটা মনে করা হয়, ইসরায়েল বিশ্বাস করে আমাদের নেতাদের হত্যার অর্থ আন্দোলন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের সংগ্রামের সমাপ্তি। তবে প্রতিবারই হামাস শক্তিশালী ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এই নেতারা মুক্ত ফিলিস্তিনের দিকে যাত্রা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আইকনে পরিণত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সরকারের একজন সাবেক উপদেষ্টা ড্যানিয়েল লেভি আলজাজিরাকে বলেছেন, সিনওয়ারের মৃত্যু হলেও তাতে নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের অবসান ঘটবে না। কারণ এটি একটি প্রতিরোধ আন্দোলন, যা এর জনগণের মধ্যে নিহিত। ফলে এটি চলতে থাকবে।

এদিকে লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছে, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযানের নতুন ধাপ শুরু করেছে। শুক্রবার হিজবুল্লাহর অভিযান পরিচালনাকারী সদরদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে ইসরায়েলবিরোধী লড়াইয়ের দ্বিতীয় ধাপের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন ধাপের লড়াই দৃশ্যমান হবে এবং এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ঘটনাগুলো দেখা যাবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.