চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ‘বাংলার জ্যোতি’ নামে একটি তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে জাহাজটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিপিসি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন থেকে জাহাজে বিস্ফোরণের কারণ জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, আবুধাবি হতে আমদানি করা প্রায় ৯৮ হাজার ৩৮৩ মেট্রিক টন মারবান ক্রুড অয়েলবাহী মাদারভ্যাসেল ‘ওমেরা ল্যাগাসি’ ১৭ সেপ্টেম্বর কুতুবদিয়া বহির্নোঙ্গরে আগমন করে। সোমবার সকাল থেকে জাহাজটি থেকে ক্রুড অয়েল খালাসের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল খালাসের পরমুহূর্তে জাহাজটির ফোর পিক স্টোরে (জাহাজের রশি, নোঙর, স্পেয়ার পার্টস রাখার স্থান) অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফোর পিক স্টোরে ডেক ক্যাডেট সৌরভ কুমার সাহা, বিএসসির ফোরম্যান নুরুল ইসলাম ও শ্রমিক মো. হারুন রুটিন কাজ করতে গেলে সেখানে জমে থাকা অতিরিক্ত দাহ্য গ্যাসের কারণে বিস্ফোরণ হয়।
এতে আরও বলা হয়েছে, জাহাজটিতে থাকা ১০ হাজার ৯১৬ দশমিক ৮৪৬ মেট্রিক টন কার্গো নিরাপদে রয়েছে। কার্গো খালাস সম্পন্ন করতে প্রায় ২২ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন হবে। কার্গো খালাস সম্পন্ন করা হলে জাহাজটি মেরামত বা সংস্কারের উদ্দেশ্যে সরিয়ে নেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জাহাজে থাকা অবশিষ্ট কার্গো খালাসের লক্ষ্যে জাহাজের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রতিনিধি পরিদর্শন করবেন। জাহাজটি নিরাপদ হিসেবে প্রত্যয়িত হলে জাহাজের অন্যান্য মেশিনারিজ ঠিক থাকা সাপেক্ষে কার্গো খালাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এমটি বাংলার জ্যোতি ও এমটি বাংলার সৌরভ জাহাজ দুটি ১৯৮৭ সালে নির্মিত। জাহাজ দুটির আয়ুষ্কাল প্রায় ৩৭ বছর। এই দুইটি জাহাজের বিকল্প জাহাজ দেশের অভ্যন্তরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ ধরনের জাহাজের বিকল্প না থাকায় উক্ত জাহাজ ২টি যথাযথ মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে চালু রাখা হয়েছে।
এর আগে, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে জাহাজটি বন্দরের ইস্টার্ন রিফাইনারি ঘাটে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাস করার সময় ‘বাংলার জ্যোতি’ জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় আশপাশে থাকা জাহাজগুলো নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।