নারী অধিকারবিষয়ক এই কমিশন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের (ইসিওএসওসি) অধীনে কাজ করে। বুধবার কাউন্সিলের অধিবেশনে ইরানের সদস্যপদ বাতিলের পক্ষে ভোট দেয় ২৯টি দেশ। রাশিয়া ও চীনসহ আটটি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। আর ১৬টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের খানানি গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘সদস্যপদ বাতিলের এ উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের একপক্ষীয় রাজনীতির ফল। এর মধ্য দিয়ে একপক্ষীয় রাজনৈতিক ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক একটি সংস্থার নির্বাচনী ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করা হয়েছে।’
নাসের খানানি আরও বলেন, ইউএনসিএসডব্লিউ থেকে ইরানের সদস্যপদ বাতিল করার আইনগত যৌক্তিকতা নেই। কমিশনের একজন বৈধ সদস্যকে অপসারণ করা রাজনৈতিক চেষ্টা, যা এই আন্তর্জাতিক সংস্থাকে অসম্মান করে এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অপব্যবহারের জন্য একতরফা পদ্ধতি তৈরি করবে।
ইরানে গত ১৬ সেপ্টেম্বর নীতি পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয় ২২ বছরের কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির। সঠিকভাবে হিজাব না পরায় মাসা আমিনিকে আটক করেছিল নীতি পুলিশ। পরবর্তী সময়ে মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তুমুল বিক্ষোভ। দাবি ওঠে হিজাব আইন বদলে ফেলার। বিক্ষোভ রুখতে দমনপীড়ন চালাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, কয়েক মাসের বিক্ষোভে ইরানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রায় ৪০০ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৬ হাজার ৮০০ জনের বেশি। ইরান সরকারের ভাষ্যে, নিহত মানুষের সংখ্যা দুই শতাধিক। ইরানের অভিনেতা-অভিনেত্রী, ক্রীড়াবিদসহ বিভিন্ন অঙ্গনের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি ইতিমধ্যে বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছেন। বিক্ষোভের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ ইরান সরকারের। তবে বিক্ষোভের মুখে কঠোর হিজাব আইনে পরিবর্তন আনার আভাস দিয়েছে ইরান সরকার।