বাস্তবতার মিশেলে বাংলাদেশ

0
126
নারী ক্রিকেটার

‘ট্রফির চেয়ে স্বর্ণের পদক বড়। সেটা জিতলে উ‌ড়বে লাল-সবুজের পতাকা’– নারী ক্রিকেটার নিগার সুলতানা জ্যোতির মতো এই স্বপ্নটা কোটি বাঙালির। ২০১০ চীনের গুয়াংজুতে এশিয়ান গেমসে যে ক্রিকেটের হাত ধরে জিতেছিল স্বর্ণ, সেই দেশে আবারও জাতীয় সংগীতের সুরের মূর্ছনায় ভেসে যেতে চান অ্যাথলেটরা। গুয়াংজুতে নয়, নানা নামে বিখ্যাত হ্যাংঝু শহরে সাফল্যের ভেলায় ভাসার প্রত্যাশা বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের।

এক আসর বাদে গেমসে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তিতে পুরোনো স্বপ্নটা নতুন করে দেখছেন লাল-সবুজের অ্যাথলেটরা। কিন্তু স্বপ্ন আর বাস্তবতার সঙ্গে বিস্তর ফারাক। ক্রিকেটে স্বর্ণ জয়ের সম্ভাবনা যেমন আছে, তেমনি করে শুটিং, আরচারিতেও আছে ভালো সম্ভাবনা। প্রবাসী বাংলাদেশি জিনাত ফেরদৌসকে ঘিরে স্বপ্নের জাল বুনেছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। স্বপ্ন আর সম্ভাবনার সঙ্গে বাস্তবতার অনেক ফারাক। কারণ ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে পদকহীন ছিল বাংলাদেশ। সেই শঙ্কা যেমন হ্যাংঝুতে আছে, আবার পদকের সম্ভাবনাও রয়েছে। ১৭টি ডিসিপ্লিনের ১৮০ অ্যাথলেট এবারের এশিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।

এরই মধ্যে মেয়েদের ক্রিকেটে সেমিফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। আগামীকাল শেষ চারে তারা খেলবে ভারতের বিপক্ষে। এই কঠিন পথটি পাড়ি দিতে পারলে স্বপ্নের ফাইনালে উঠে যাবেন জ্যোতিরা। ১৩ বছর আগে যে গুয়াংজুতে ছেলেরা স্বর্ণ জিতেছিলেন, সেই আসরে ফাইনালে উঠেও পাকিস্তানের কাছে হেরে রুপা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েদের। অতীত ইতিহাস আর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে নিগাররা বেশ আত্মবিশ্বাসী।

নিয়ম না জানায় এশিয়াডে শক্তিশালী পুরুষ দল পাঠাতে পারেনি বাংলাদেশ। যেখানে ভারত জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে হ্যাংঝুতে পাঠিয়েছে স্বর্ণপদকের জন্য। যে ফুটবল জাকার্তায় নকআউটে ওঠে ইতিহাস গড়েছিল, রহমত মিয়ারা এবার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে। এশিয়াডে যে ইভেন্টটি ১৯৯০ সাল বাংলাদেশকে পদক এনে দিয়েছিল, কাবাডিও গত আসরে ব্যর্থ হয়েছে। হারানো পদক পুনরুদ্দারের জন্য পুরুষ ‌ও নারী দলকে ভারতে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়েছে ফেডারেশন।

ক্রিকেট, ফুটবল, কাবাডির বাইরে শুটিং ও আরচারি ইভেন্টের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ। তীর-ধনুকের খেলায় কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করা রোমান সানা এবং দিয়া সিদ্দিকীকে নিয়ে আছে আশা। আর শুটিংয়ে আব্দুল্লাহ হেল বাকি, শাকিল আহমেদ, আনজিলা আমজাদদের নিয়ে আশার বেলুন উড়িয়েছেন কর্তারা। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে মেলাতে গেলে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে পদক জয়ের সম্ভাবনা কঠিন।

এশিয়াডে যে ১২টি পদক জিতেছিল বাংলাদেশ, তার মধ্যে ১৯৮৬ সিউলে বক্সার মোশাররফ হোসেনই ব্যক্তিগতভাবে দেশকে ব্রোঞ্জ এনে দিয়েছিলেন। বাকি সব পদকই দলীয়। তাই এবার ব্যক্তিগত অর্জনে নতুন ইতিহাস গড়ার প্রত্যয় বাংলাদেশের অ্যাথলেটদের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.