সাফে ভালো খেলার পুরস্কার হিসেবে দেড় লাখ টাকা করে পেলেন জামালরা

0
87
১৪ বছর পর সাফের সেমিফাইনালে খেলার পুরস্কার হিসেবে দলের সবাইকে দেওয়া হয়েছে দেড় লাখ টাকা করে

মতিঝিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবন আজ দুপুরে হয়ে উঠেছিল সরগরম। সদ্য সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে আসা সব ফুটবলারই এলেন ভবনে। তাঁদের সৌজন্য সাক্ষাতে আমন্ত্রণ জানান বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। সৌজন্য সাক্ষাতের আড়ালে আসলে ফুটবলারদের পুরস্কৃত করা হয়েছে এই অনুষ্ঠানে।

১৪ বছর পর সাফের সেমিফাইনালে খেলার পুরস্কার হিসেবে দলের সবাইকে দেওয়া হয়েছে দেড় লাখ টাকা করে। সেমিফাইনালে উঠলে পুরো দলকে ৫০ লাখ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সালাউদ্দিন আগেই দিয়েছিলেন বাফুফে ভবনে। সেই পুরস্কারের অর্থই আজ ফুটবলাদের দেওয়া হয়েছে। ফুটবলারদের সামনে আলাদাভাবে খামে রাখা হয় টাকা। এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে বাফুফের পক্ষ থেকে।

এ ছাড়া তিনজন ফুটবলারকে ব্যক্তিগতভাবে পুরস্কৃত করেন সালাউদ্দিন। মঞ্চে তিনি আলাদাভাবে ডেকে সাফের সেরা গোলকিপার আনিসুর রহমান ও তরুণ শেখ মোরছালিনকে দিয়েছেন এক লাখ টাকা করে। রাইটব্যাক বিশ্বনাথ ঘোষকে দিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। সাফের ফাইনালে উঠতে পারলে বিশ্বনাথ নিজে গোটা দলকে ৫ লাখ টাকা উপহার দেবেন বলেছিলেন। সেটা জানতে পেরে বিশ্বনাথের উদার মনের জন্য তাঁকে ৫ লাখ টাকা দেন সভাপতি। বিশ্বনাথ এই টুর্নামেন্টে দারুণ খেলেছেন।

গোলরক্ষক আনিসুর রহমানের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অর্থ পুরস্কার
গোলরক্ষক আনিসুর রহমানের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অর্থ পুরস্কার

বিশ্বনাথের ব্যাপারে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘ওর কথাটা স্পিরিটের অংশ। এ রকম খেলোয়াড়ই আমার দরকার। তাকেও আমার পক্ষ থেকে সামান্য অর্থ পুরস্কার।’

বাফুফে সভাপতি আর্থিক বোনাস নিয়ে বলেন, ‌‘আমার তেমন সামর্থ্য নেই। তাই খুব সামান্য অর্থ দিচ্ছি। তোমরা অবশ্যই এর চেয়ে বেশি পাওয়ার যোগ্য। আমার সামর্থ্য থাকলে অবশ্যই বেশি দিতাম।’

কাজী সালাউদ্দিন ফুটবলারদের উদ্দেশ্য বলেন, ‘এই টুর্নামেন্টে তোমরা দারুণ খেলেছ। আমি খুবই খুশি তোমাদের ওপর। আমরা মানসম্পন্ন ফুটবল যে খেলতে পারি, সেটা দেখাতে পেরেছি। দুটি ম্যাচ আমরা হেরেছি। তবে ভালো খেলেছি। দল যাওয়ার আগে অনেকে অনেক কথা বলেছিল। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, যখন আমার বাসায় কোচসহ জামাল-তপুরা এসেছিল। আমি তাদের বলেছিলাম, ম্যাচের আগেই হেরো না। ওরা আমাকে কথা দিয়েছে। এবং সে রকমই খেলেছে।’

সালাউদ্দিন নাম ধরে ধরে প্রশংসা করেন কয়েকজন ফুটবলারের। সবার আগে আসে গোলকিপার আনিসুর রহমানের নাম। আনিসুর এবারের সাফে সেরা গোলকিপার হয়েছেন। সালাউদ্দিন বলেন, ‘জিকো আমাদের গর্বিত করেছে। লেফট ব্যাক ইসা ফয়সাল খুব ভালো খেলেছে। তপু, তারিক কাজীও ভালো খেলেছে। সিনিয়র সোহেল রানা, আবাহনীর সোহেল রানা। ফাহিম, হৃদয়, মোরছালিনরা নজর কেড়ছে। আমি ওদের পারফরম্যান্সে খুবই সন্তুষ্ট। রাকিব বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড। সে নিজেকে পরিচর্যা করলে দেশের সর্বকালের সেরা ফরোয়ার্ড হতে পারবে। আমি কিছুদিন আগে বলেছিলাম এই দল বাংলাদেশের সেরা দল। এটা নিয়ে অনেকে আমাকে কটূক্তি করেছে। তবে এটা বলব, এই দলই দেশের সেরা টিম।’

সাফের দলকে দেশের সেরা টিম বলছেন সালাউদ্দিন
সাফের দলকে দেশের সেরা টিম বলছেন সালাউদ্দিন

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ছিলেন উচ্ছ্বসিত, ‘আমাদের মন খারাপ। কারণ, আমরা ফাইনালে খেলতে পারিনি। তবে সভাপতি যে সম্মান দিয়েছেন, আমরা খুশি। যাওয়ার আগে কোচকে সভাপতি বলেছিলেন দুজন স্ট্রাইকার খেলাতে। তাঁর উপদেশ কাজে এসেছে।’ জামাল গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটি বলেছেন, সেটি হলো, ‘আজ থেকেই শুরু হলো বাংলাদেশের নতুন যাত্রা।’

সত্যিই তা–ই। বাংলাদেশের ফুটবল যেন আজ নতুন দিনে পা রেখেছে!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.