বিশ্বকাপের নেতৃত্বে আগ্রহী নন সাকিব

0
139

তামিম ইকবালের নীরব থাকা বা সরব হওয়া দুটিই এখন ‘গরম খবর’। এই খবর সংগ্রহ করতে গতকাল দিনভর ছোটাছুটি করেন ক্রীড়া সাংবাদিকরা। দিনশেষে ফল শূন্য– বিসিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক হয়নি তামিমের। চিকিৎসকের দেওয়া বিশ্রামের সপ্তাহ পার করে আজ হয়তো কার্যক্রম শুরু করবেন। আলোচনায় বসবেন বিসিবি কর্তাদের সঙ্গে। কিছু সিদ্ধান্ত জানা এবং নেওয়ার জন্য এ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। বিশেষ করে অধিনায়কত্ব ইস্যুতে।

কারণ, কোমরের ব্যথা পরিচর্যা করতে তামিম এশিয়া কাপ থেকে ছুটি নিলে বিকল্প নেতৃত্বে খেলতে হবে। কে হতে পারেন সেই নেতা– এ নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। শুধু এশিয়া কাপের জন্য হলে তামিমের ডেপুটি লিটন কুমার দাস ভারপ্রাপ্ত হবেন। ভারত আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজেও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ছিলেন তিনি। তবে এশিয়া কাপ থেকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেতৃত্ব পরিবর্তনের চিন্তা থাকলে অবধারিতভাবে সাকিব আল হাসানের নামও চলে আসবে। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট বেশির ভাগ মানুষই এভাবে চিন্তা করবেন।

কিন্তু সত্যটা হলো, সাকিব ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হতে আগ্রহী না। দেশের ক্রিকেটের বর্তমান বাস্তবতায় সাকিবের কাছে তাঁর একজন ঘনিষ্ঠজন জানতে চেয়েছিলেন– বিসিবি থেকে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হওয়ার প্রস্তাব পেলে গ্রহণ করবেন কিনা? তিনি উত্তরে সাফ বলে দেন, রাজি হবেন না। সাকিবের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে সমকাল।

বিসিবি তামিমকে নেতৃত্বে রেখেছে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তিনি ফিট হলে বিকল্প অধিনায়ক নিয়ে ভাবতে হবে না। এমনকি এশিয়া কাপে না খেলে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে দলে ফিরতে চাইলেও। বিসিবিকে তাই অপেক্ষা করতে হচ্ছে তামিমের সিদ্ধান্ত জানার জন্য। তিনিও সময় নিচ্ছেন ভেবে-চিন্তে পরিকল্পনা জানাবেন বলে।

এর মধ্যেও কথা উঠেছে তামিম খেলতে না পারলে কে হবেন অধিনায়ক? বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গতকাল বলেছেন, ‘তামিম খেলতে না পারলে আগে যে করেছে লিটন, সে-ই করবে।’ লিটন ওয়ানডে ক্রিকেটে মাত্র পাঁচটি ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন। গত বছর ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। এ বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচের অধিনায়ক ছিলেন তামিম অবসর ঘোষণা দেওয়ার পর। চাপা স্বভাবের হলেও অধিনায়ক হিসেবে মুনশিয়ানা দেখান উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার।

প্রশ্ন হচ্ছে, লিটন এশিয়া কাপের মতো বড় টুর্নামেন্টে চাপ অনুভব করবেন না তো? আসলে লিটনের ওপর আস্থা রাখা ছাড়া এ মুহূর্তে কিছু করার নেই বিসিবির। কারণ, তামিমের সমসাময়িক দুই সিনিয়র ক্রিকেটার– সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিম অধিনায়কত্ব নেবেন না।

অধিনায়কত্ব নিয়ে অভিমান আছে মুশফিকের। বাংলাদেশ দলে আর কখনও অধিনায়ক হবেন না বলে অনেক আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। বিসিবি কর্তারা এ ব্যাপারে অবগত। বাকি থাকেন সাকিব ও লিটন। স্বাভাবিকভাবেই বোর্ড কর্মকর্তাদের প্রথম পছন্দ সাকিব। কারণ, নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার দিক থেকে সবচেয়ে অভিজ্ঞ তিনি। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অধিনায়ক ছিলেন। ২০১৫ ও ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে মাশরাফি বিন মুর্তজার ডেপুটি ছিলেন। বর্তমানে টেস্ট ও টি২০ দলের অধিনায়ক তিনি। বিশাল অভিজ্ঞতা থাকার পরও ভারত বিশ্বকাপ পর্যন্ত ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হতে রাজি না তিনি। আসলে বর্তমান বাস্তবতায় কোনো রকম বিতর্কের সুযোগ দিতে চান না বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার। আর দশজন ক্রিকেটারের মতো দলের সাধারণ সদস্য হিসেবে থাকতে চান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.