চিকিৎসার মাধ্যমে হেপাটাইটিস নিরাময় সম্ভব

0
150
হেপাটাইটিস

হেপাটাইটিস বলতে লিভারে প্রদাহজনিত জটিলতাকে বোঝায়। ভাইরাল হেপাটাইটিস হলো ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট লিভারের প্রদাহ। হেপাটাইটিস ভাইরাস পাঁচ ধরনের। যেমন– হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি এবং ই। হেপাটাইটিস বি ও হেপাটাইটিস সি সবচেয়ে মারাত্মক। এ দুই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর বেশির ভাগই লিভার সিরোসিস বা লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো শারীরিক সমস্যা বা লক্ষণ অনুভব করেন না। তবে অনেক সময় এক বা একাধিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

লক্ষণ

• জন্ডিসের লক্ষণ প্রকাশ, অর্থাৎ চোখের সাদা অংশ এবং পুরো শরীর হলুদ হয়।

• কখনও কখনও পেটের ডান পাশের ওপরের দিকে ব্যথা হয় এবং দুর্বলতা বা ক্লান্তি বোধ হয়।

• ফ্লু-এর মতো জ্বর বা জ্বর জ্বর ভাব হয়।

• বমি বা বমি ভাব কিংবা ক্ষুধামান্দ্য হতে পারে।

• শরীর ও পেশিতে ব্যথা হয়।

• ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়।

হেপাটাইটিস কীভাবে ছড়ায়

• হেপাটাইটিস এ ও ই মূলত দূষিত খাবার খাওয়া বা দূষিত পানি পানের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপদ পানির অভাব এবং স্যানিটেশন-স্বল্পতার সঙ্গে দরিদ্র দেশগুলোয় প্রায়ই এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

• হেপাটাইটিস বি সংক্রমিত ব্যক্তির রক্ত বা শরীরের অন্যান্য তরলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেমন– প্রসবের সময় এই রোগ মা থেকে সন্তানে ছড়িয়ে যেতে পারে অথবা রেজর কিংবা টুথব্রাশ ভাগাভাগির মাধ্যমে, অরক্ষিত যৌন মিলন কিংবা ইনজেকশনের সুই ও সিরিঞ্জ ভাগাভাগির মাধ্যমেও ছড়িয়ে যায়।

• হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত, রেজর বা অরক্ষিত যৌন মিলন কিংবা ইনজেকশনের সুই ও সিরিঞ্জ ভাগাভাগির মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।

হেপাটাইটিস প্রতিরোধের উপায়

• হেপাটাইটিস এ ও ই সংক্রমণ রুখতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, নিরাপদ খাবার, খাওয়ার আগে হাত ধোয়া নিশ্চিত করতে হবে।

• রক্তদান ও গ্রহণের আগে রক্তদাতার হেপাটাইটিস বি ও সি পরীক্ষা করে নিতে হবে।

• একই ইনজেকশনের সুই একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

• চিকিৎসা বা সার্জারির সময় জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

• অন্যের ব্যবহৃত ব্রাশ, শেভিং রেজর, কান বা নাক ছিদ্রকরণের সুই ব্যবহার করা যাবে না।

• নিরাপদ যৌনচর্চা করতে হবে।

• সব নবজাতককে জন্মের পরপরই হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন দিতে হবে।

• অ্যালকোহল বা ধূমপান বর্জন করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, হেপাটাইটিস ছোঁয়াচে নয়। হেপাটাইটিস বি ও সি চিকিৎসাযোগ্য এবং চিকিৎসায় অনেকটাই নিরাময়যোগ্য।

লেখক: ডা. মো. ফরহাদুল ইসলাম চৌধুরী, পরিপাকতন্ত্র ও লিভার বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার লি. মিরপুর-১০, ঢাকা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.